আধুনিক ক্রিকেটে বেশ আলোচিত বিষয় পাওয়ার হিটিং। টি-টোয়েন্টির যুগে ব্যাটসম্যানদের পেশিশক্তিই অনেক ক্ষেত্রে ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দেয়। তবে এ নিয়ে তর্ক আছে ঢের।
অনেকেই আবার বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন, পেশিশক্তি মুখ্য নয়। তাদের ভাষায় স্কিল আর টেকনিক দিয়েই বড় বড় ছক্কা হাঁকানো যায়। তবে বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান লিটন দাস মনে করেন, টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ার হিটিংয়ের ভূমিকা ঢের।
যেখানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও অসহায় আত্মসমর্পণ। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় হোয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে রক্ষা। তবে পরের দুই ম্যাচ সহজেই জিতে সিরিজ ঠিকই নিজেদের করে নিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল।
বৃহস্পতিবার রাতে গায়ানায় দশ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে ক্যারিবীয়রা। নিকোলাস পুরান ৩৯ বলে ৭৪ ও কাইল মায়ার্স ৩৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে। দুজনের জুটির সংগ্রহ ছিল ৮৫ রান।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে লিটন দাস ৪১ বলে ৪৯ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব খেলেন ৩৮ বলে ৫০ রানের ইনিংস। বাকি কেউই তেমন কিছু করতে পারেননি। যে কারণে বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েও ১৬৩ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২২ রান করতে খেলেন ২০টি বল।
তাই তো ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে ব্যাটিং ব্যর্থতার কথাই বলেন লিটন। তার ভাষ্য, ‘আমরা খুব একটা ভালো ব্যাটিং করিনি। প্রথম ম্যাচেও না, দ্বিতীয় ম্যাচেও না। যে কন্ডিশনে আমরা খেলেছিলাম, ব্যাটিং সহায়কই ছিল।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা যদি ওপেনিং থেকে দায়িত্বটা পালন করতে পারতাম, তাহলে পরের ব্যাটাররা মন খুলে খেলতে পারতো। আমার মনে হয়, আমাদের দুই-তিনটি ইনিংসের ব্যর্থতার কারণেই জিনিসটা ওভাবে গুছিয়ে নেওয়া যায়নি।
আমার কাছে (ব্যর্থতার কারণ) এ জিনিসটিই মনে হয়েছে। এসময় একটি অমোঘ সত্য অকপটে স্বীকার করে যান দলের তারকা ব্যাটার। ওয়ানডেতে যেমন-তেমন, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে যে বাংলাদেশ এখনও পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায়নি, সেটি বলে গেছেন লিটন দাস।
তবে এক্ষেত্রে পাওয়ার হিটিংয়ে দুর্বলতাকে বড় কারণ মনে করেন লিটন। এ ডানহাতি ওপেনার বলেছেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ভালো দলগুলো থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে। আমাদের অনেক জায়গায় কাজ করার আছে।
বিশেষ করে আমরা পাওয়ার ক্রিকেট খেলতে পারি না। অনেকে বলে টি-টোয়েন্টি স্কিলের খেলা, টেকনিক-ট্যাকটিকের খেলা। তবে আমার মনে হয়, অনেক সময় পাওয়ার হিটিংটাও দরকার পড়ে।
এই জিনিসটায় আমরা অনেকখানি পিছিয়ে। লিটনের শেষ কথা, ‘বিশ্বকাপে আমরা যেখানে (অস্ট্রেলিয়া) খেলবো, মাঠ অনেক বড় থাকবে। এ জিনিসটা আমাদের ভোগাবে।
আসন্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের আগে মায়ার্স-পুরানদের মতো পাওয়ার হিটিং আয়ত্ব করতে না পারলে ভুগতে হবে বলে মনে করছেন লিটন, ‘বিশ্বকাপে যেখানে (অস্ট্রেলিয়া) খেলব, সেখানে মাঠ অনেক বড় থাকবে।
এই জিনিসটা আমাদের অনেক ভোগাবে। আমরা যত পারব অনুশীলন করব, গেম খেলব, এই জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে পারি, আমরা ভালো আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারব বিশ্বকাপে।’