Breaking News

এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া শ্রীলঙ্কাকে সুজন- ‘বিশ্বমানের তারকা ছাড়াই ১১ ভাইয়ের শক্তিতে জয়’

যে দেশটির লাখো মানুষ হাজারো দুশ্চিন্তা নিয়ে প্রতিরাতে বিছানায় যায়, আজ তারা রাত জাগবে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উল্লাসে। এই জয় তাদের দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করে দেবে না; অপরাজনীতি দূর করতে পারবে না, চালের দাম কমাতে পারবে না

কিন্তু কিছু সময়ের জন্য হলেও গর্বে বুকটা ফুলে উঠবে দ্বীপরাষ্ট্রের নাগরিকদের। রাতের খাবার জোগার করতে না পারা মানুষটির মুখেও থাকবে এক চিলতে হাসি। কারণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আজ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা।

বিশ্বদরবারে উজ্জ্বল হয়েছে দেশের মুখ। যারা এই বিজয় এনে দিয়েছে তারা ডাকসাইটে কেউ নয়, তারা ১১টি ভাই।
মনে আছে খালেদ মাহমুদ সুজনের সেই মন্তব্যের কথা? আফগানিস্তানের কাছে বাজেভাবে হেরে এবারের এশিয়া কাপ শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা।

ওই ম্যাচের পরই লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা বলেছিলেন, সাকিব-মুস্তাফিজ ছাড়া বাংলাদেশ দলে বিশ্বমানের কেউ নেই। এই কথায় যেন আগুন লেগে যায়। পাল্টাপাল্টি বক্তব্য চলতে থাকে।

এমনকী বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন পর্যন্ত বলে বসেন, শ্রীলঙ্কা দলে তিনি কোনো বোলারই দেখেন না! বিশ্বমানের কেউ নেই। সেই শ্রীলঙ্কার এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হতে বিশ্বমানের কারও প্রয়োজনই পড়ল না।

দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আজকের ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে উড়িয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শুরুতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পাকিস্তানের হাতেই ছিল। সেই নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়ে ১১টি ভাই দেখিয়ে দিয়েছে তারা কেন চ্যাম্পিয়ন। ১১টি ভাইয়ের প্রসঙ্গটা তো পাঠকদের ভুলে যাওয়ার কথা নয়।

আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে ওই হারের পর দাসুন শানাকা বাংলাদেশকে সহজ প্রতিপক্ষ বলেছিলেন। এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। মাহেলা জয়াবর্ধনে পর্যন্ত টুইটারে লিখেছিলেন, ‘দেখিয়ে দাও’। লঙ্কানরা দেখিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে ২ উইকেটে হারিয়ে।

সেই যে জয়ের শুরু হলো, টুর্নামেন্টে আর হারেনি শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশকে হারানোর পর শ্রীলঙ্কার ডানহাতি স্পিনার মহীশ থিকশানা টুইটারে লিখেছিলেন, ‘বিশ্বমানের খেলোয়াড়ের কোনো প্রয়োজন নেই, যখন তোমার ১১টা ভাই আছে।

সেই ১১টা ভাই মিলেই আজ দলকে চ্যাম্পিয়ন করে দিল। কী অসাধারণ তাদের টিম স্পিরিট, মাঠে নিবেদন, হার না মানা লড়াকু মানসিকতা- সব মিলিয়ে যোগ্যতম দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শ্রীলঙ্কা।

আগ বাড়িয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ পুড়েছে খালেদ মাহমুদ সুজনের। শ্রীলঙ্কার ১১টা ভাই দেখিয়ে দিয়েছে, দৃঢ়প্রতিজ্ঞা থাকলে যে কোনো বাধা বিপত্তি পেরিয়ে যাওয়া যায়।

তারুণ্যের এই দাপুটে বিজয়ে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় আজ খুশির ঢেউ। চলছে আনন্দ অশ্রু বিসর্জন। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা বলেছিলেন, শিরোপা জয় করে তারা দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান।

১১ জন ভাই মিলে সেই কথা রেখেছেন। তারুণ্যের গর্জনে কেঁপেছে মরু প্রান্তর। বিশ্বক্রিকেটে বেজেছে নতুন শক্তির আগমনী গান। জয় হয়েছে ১১টি ভাইয়ের। জয় হয়েছে ক্রিকেটের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *