দীর্ঘ ২১ বছরের কেউ যা পারেনি তা করে দেখালেন আসিথা। বাংলাদেশের মাটিতে খেলা মানেই স্পিনের জয়জয়কার- ঐতিহাসিক সত্য হিসেবেই প্রচলিত এটি। এবার বাংলাদেশ সফরে এসে আগের সব হিসেবনিকেশ বদলে দিলো শ্রীলঙ্কা।
স্পিন নয়, বরং পেস বোলিং দিয়েই স্বাগতিকদের কুপোকাত করলো দিমুথ করুনারাত্নের দল। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ইনিংসে দুই পেসার কাসুন রাজিথা (৪) ও আসিথা ফার্নান্দো (৩) মিলে নেন সাত উইকেট।
মিরপুরে আরও ক্ষুরধার এ দুই পেসার। দুই ইনিংসের ২০ উইকেটের মধ্যে আসিথা ও রাজিথার শিকার ১৭টি উইকেট। যেখানে দুজনই তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ উইকেট।
প্রথম ইনিংসে রাজিথা নিয়েছিলেন পাঁচটি, আসিথার শিকার ছিল চার উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে রাজিথা শুধু দুই উইকেট নিলেও, আসিথার আগুনে পুড়েছেন বাংলাদেশের ছয় ব্যাটার।
দুই ইনিংস মিলে আসিথার শিকার দশ উইকেট। যার সুবাদে তিনিই জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার, পাশাপাশি শেষ হয়েছে লঙ্কানদের ২১ বছরের অপেক্ষা।
এতোদিন ধরে শ্রীলঙ্কার পেসারদের মধ্যে টেস্টে এক ম্যাচে দশ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব ছিল শুধুমাত্র চামিন্দা ভাসের। ১৯৯৫ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নেপিয়ার টেস্টে ১০ এবং ২০০১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কলম্বো টেস্টে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন ভাস।
শ্রীলঙ্কার আর কোনো পেসারেরই ছিল না ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার নজির। অবশেষে দীর্ঘ ২১ বছর পর মিরপুর টেস্টে এসে আবারও শ্রীলঙ্কার কোনো পেসার নিলেন ম্যাচে দশ উইকেট।
এখন শ্রীলঙ্কার পক্ষে শুধু ভাস আর আসিথারই রয়েছে ম্যাচে দশ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। পাশাপাশি শ্রীলঙ্কার আটজন স্পিনারের রয়েছে এ কীর্তি। সর্বোচ্চ ২২ বার ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন মুত্তিয়া মুরালিধরন, রঙ্গনা হেরাথ নিয়েছেন নয়বার।
এছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে এ নিয়ে মাত্র তৃতীয়বার কোনো পেসার নিলেন ম্যাচে ১০ উইকেট। ২০০৪ সালে ঢাকা টেস্টে ভারতের ইরফান পাঠান নেন ১১ উইকেট।
ছয় বছর পর ২০১০ সালে মিরপুর টেস্টে ইরফানের স্বদেশি জহির খান শিকার করেছিলেন ১০ উইকেট। এক যুগ পর এবার নিলেন আসিথা ফার্নান্দো। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের কোনো পেসার এক টেস্টে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৯ উইকেট।
২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে প্রথম ইনিংসে ছয় ও দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন রাজিব। ঘরের মাঠে শাহাদাত ছাড়া বাংলাদেশের কোনো পেসারের ৫ উইকেট নেওয়ারও নজির নেই।