Breaking News

নেদারল্যান্ডসকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু পাকিস্তানের

ম্যাচের কোনো কোনো সময় পাকিস্তানকে দুশ্চিন্তায় রেখেছিল নেদারল্যান্ডস। সেটা পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের সময় কিছুটা এবং বোলিংয়ের সময়ও। তবে সেই দুশ্চিন্তা বড় হয়নি। হায়দরাবাদে ডাচদের ৮১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েই বিশ্বকাপ মিশন শুরু

করেছে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট পাকিস্তান। নেদারল্যান্ডসের সামনে লক্ষ্য ছিল ২৮৭ রানের। ডাচ ব্যাটাররা শুরুতে দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেছেন। ৫০ রানে ২ উইকেট হারালেও বিক্রমজিৎ সিংয়ের ফিফটিতে ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ১২০ রান

তুলে ফেলেছিল কমলা জার্সিধারীরা। পাকিস্তান শিবিরে তখন জেঁকে বসেছিল ভয়! তবে বোলাররা দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরিয়েছেন দলকে, হঠাৎ ধস নামিয়েছেন ডাচদের ইনিংসে। তাদের শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন বেস ডি লেডে।

তিনিও ৬৮ বলে ৬ চার আর ২ ছক্কায় ৬৭ রান করে মোহাম্মদ নওয়াজের বলে বোল্ড হলে সব আশা শেষ হয়ে যায়! রান তাড়ায় নামা নেদারল্যান্ডসের ম্যাক্স ও’দাউদকে ফিরিয়ে ২৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন হাসান আলি।

এরপরও ডাচরা মোটামুটি দেখেশুনে এগোচ্ছিল। কিন্তু ১২তম ওভারে বল হাতে নিয়েই দলকে উইকেট এনে দেন ইফতিখার আহমেদ। কলিন আকারম্যান (২১ বলে ১৭) সুইপের লোভ করতে গেয়ে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

তৃতীয় উইকেটে বেস ডি লেডে আর বিক্রমজিৎ গড়েন ৭৬ বলে ৭০ রানের লড়াকু জুটি। কিন্তু ২৪তম ওভারে বিক্রমজিৎ (৬৭ বলে ৫২) শাদাব খানের শিকার হওয়ার পর ব্যাকফুটে চলে যায় নেদারল্যান্ডস। ২৬তম ওভারে এসে তিন বলের মধ্যে দুই ডাচ ব্যাটারকে

সাজঘরের পথ দেখান হারিস রউফ। তেজানিদামানুরুকে ৫ আর অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে ০ রানে ফেরত পাঠান পাকিস্তানি গতিতারকা। ১৩৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে নেদারল্যান্ডস।

সেখান থেকে বেস ডি লেডের লড়াই। কিন্তু সেই লড়াই দলকে বড় হার থেকে বাঁচাতে পারেনি। ৪১ ওভারে ২০৫ রানে অলআউট হয়েছে নেদারল্যান্ডস। পাকিস্তানের হারিস রউফ ৪৩ রানে নেন ৩টি উইকেট।

৩৩ রানে ২ উইকেট শিকার হাসান আলির। এর আগে সেঞ্চুরি জুটিতে শুরুর ধাক্কা সামলালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সৌদ শাকিল। শেষের ধাক্কা মোকাবেলায় ব্যাট হাতে দক্ষতা দেখালেন শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজরা।

সবমিলিয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৪৯ ওভারে অলআউট হলেও ২৮৬ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজিই পেয়েছে পাকিস্তান। রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে শুরুতেই চেপে ধরেছিল নেদারল্যান্ডস।

১০ ওভার হওয়ার আগেই পাকিস্তানের ৩টি উইকেট তুলে নেন ডাচ বোলাররা। ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে একে একে সাজঘরের পথ ধরেন ফাখর জামান, ইমাম উল হক এবং অধিনায়ক বাবর আজম। ৩৮ রানের মধ্যে তিন

টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে রীতিমত ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান। চতুর্থ ওভারেই পাকিস্তান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন ডাচ বোলার লোগান ফন বিক। তাকে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে বসেন পাকিস্তানি ওপেনার ফাখর জামান।

১৫ বলে ১২ রান করে আউট হন তিনি। দলীয় রান ছিল তখন ১৫। এরপর বাবর আজম এবং ইমাম-উল হক জুটি বাধেন। কিন্তু সেটা মাত্র ১৯ রানের। ১৮ বলে ৫ রান করে পল অ্যাকারম্যানের বলে সাকিব জুলফিকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর।

দলের রান ছিল এ সময় ৩৪। ১৯ বলে ১৫ করে আউট হয়ে যান ইমাম-উল হকও। পল ফন মিকেরেনের বলে আরিয়ান দত্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই ওপেনার। ৩৮ রানে ছিল না ৩ উইকেট।

ডাচ বোলারদের তোপে শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে তারা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মোহাম্মদ রিজওয়ান আর সৌদ শাকিলের জুটিতে। শুধু জুটিই গড়েননি, দলের রানকেও বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়িয়েছেন এই যুগল।

১১৪ বলে তাদের ১২০ রানের জুটিটি অবশেষে ভাঙেন আরিয়ান। ৫২ বলে ৯ চার আর ১ ছক্কায় ৬৮ করে সাজঘরের পথ ধরেন সৌদ। তার জুটি সঙ্গী রিজওয়ানও ঠিক ৬৮ রান করেই আউট হন।

বেস ডি লেড এক ওভারে সাজঘরে ফেরান দুই পাকিস্তানি ব্যাটারকে। তার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রিজওয়ান। ৭৫ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৮টি বাউন্ডারির মার। দুই বল পর উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ইফতিখার আহমেদও (১১ বলে ৯)।

দুই সেট ব্যাটারসহ ৩০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফের চাপে পড়ে পাকিস্তান। ১৮৮ রানে ৬ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ নওয়াজ আর শাদাব খান। ৭০ বলে ৬৪ রানের জুটি গড়েন তারা।

বেস ডি লেডের বলে শাদাব (৩৪ বলে ৩২) বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। ওই ওভারেই হাসান আলিকেও (০) এলবিডব্লিউ করে ফেরান ডাচ পেসার। মোহাম্মদ নওয়াজ রানআউট হন ৪৩ বলে ৩৯ করে।

শেষদিকে হারিস রউফ ১৪ বলে ১৬ আর শাহিন শাহ আফ্রিদি ১২ বলে করেন অপরাজিত ১৩ রান। নেদারল্যান্ডসের বেস ডে লিডে ৬২ রান খরচায় নেন ৪টি উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *