Breaking News

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কেন নেই সাইলেন্ট কিলার ?

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কেন নেই সাইলেন্ট কিলার ? ভালোবাসা! আবেগে মোড়ানো এক অনুভূতির নাম। যে আবেগে মানুষ জয় করতে চায় অসমুদ্র হিমাচল। ভেঙে দিতে চায় সব বাঁধা, ডিঙিয়ে যেতে চায় সব প্রতিকূলতা। বাস্তবতার সাথেও জিতে যেতে চায় ভালোবাসার টানে।

জানে হেরে যেতে পারে, হয়তো বা হেরে যেতেই হবে; তবুও লড়াই করে যায় ভাগ্যের সাথে এক মিথ বিশ্বাসে। যদি, যদি লেগে যায়
হয়তো এমনই বিশ্বাসে, ভালোবাসার প্রখর টানে তিন দিন যাবত মিরপুরে একদল ভবঘুরে।

তাদের স্লোগানে স্লোগানে চারপাশ মুখরিত ভিন্ন আবহে। কোন খেলা নেই, দলও মাঠে নেই; তবুও কেন এরা দাঁড়িয়ে স্টেডিয়াম চত্বরে? চোখ মেলে, কান খুলে শুনুন আর দেখুন তবে; হাতে ব্যানার, মুখে চাই অধিকার।

সমস্বরে প্রশ্ন সবার, বিশ্বকাপে কেন নেই সাইলেন্ট কিলার? রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে দাবী তাদের একটাই, ‘মাহমুদউল্লাহকে বিশ্বকাপ দলে চাই। এত গেল মিরপুরে। একই কাণ্ড দেখা গিয়েছে ময়মনসিংহে।

রীতিমতো প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে একদল যুবক ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে জেলা সার্কিট হাউজ প্রান্তরে। একই সুর তাদের মুখে, মাহমুদউল্লাহকে চাই বিশ্বকাপে।

ব্রহ্মপুত্র পাড়ের মাটির ছেলে মাহমুদউল্লাহকে দলে ফেরাতে মানববন্ধন ডেকেছে ওরা ভর দুপুরে। রোদের প্রখরতা উপেক্ষা করে, ভালোবাসার টানে একই দাবি নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে তারা ঘামে ভেজা কাপড়ে।

ঘটনার সূত্রপাত তো সবারই জানা। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্যতম কান্ডারি, আঁধারের দিশারী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হঠাৎই হারিয়েছেন দলে জায়গা। হঠাৎ বলাটা ভুল হবে, গুঞ্জনটা আগে থেকেই ছিলো বটে।

গুঞ্জনের সূচনাও মাহমুদউল্লাহরই হাতে। তার ধারাবাহিক ব্যর্থতাই বাধ্য করেছে নির্বাচকদের এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে। সর্বশেষ ১১ ম্যাচে মাত্র ১৬.৫৪ গড়, স্ট্রাইক রেট ১০২.৮২।

তবে খেলার সময় বিবেচনায় ধরন নিয়েই বেশি প্রশ্ন জনমনে, এতো বাজে ব্যাটিং এপ্রোচ দেখা যায়নি কখনো আগে। এদিকে বয়সটাও ৩৭ ছুঁই ছুঁই। প্রফুল্লতা ঢাকা পড়েছে বয়সের ভারে, ভাটা পড়েছে প্রাণোচ্ছ্বল স্রোতে।

ফলে তরুণদের সুযোগ দিতে, সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে বুকে পাথর বেঁধেই হয়তো প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুকে বলতে হয়েছে, ‘মাহমুদউল্লাহ নেই দলে।’ পাথর না বেঁধে কি উপায় আছে?

মাহমুদউল্লাহ কি আর কে, ইতিহাসের পাতা তো দাঁড়িয়ে আছে তার সাক্ষী হয়ে। তার অবদান, অর্জন, কীর্তি আর বীরত্ব কেউ কি কখনো ভুলতে পারে? কিন্তু সব শুরুরই তো শেষ আছে। কারো গোধূলিতেই তো কারো সূর্য উঠে।

আর নতুন দিনের গান গাইতে, নতুন সূর্য উদয়ন আবশ্যকীয়ই তো ছিলো বটে। কিন্তু ভালোবাসা কি এসব বোঝে, ভালোবাসা কি আর যুক্তি মানে? ভালোবাসা তো এক আবেগ, এক অনুভূতি

যা রুখে দেয়ার সাধ্যি কার আছে? জানে তারা হেরে যাবে, বাস্তবতা যদিও মানে। কিন্তু মনকে মানায় কি করে? স্মৃতিগুলো যে চোখে খেলা করে, সুখানুভূতিগুলো যে ভেসে উঠে মানসপটে।

ফলেই তারা ঘর ছেড়ে ময়মনসিংহের সার্কিট হাউজ কিংবা মিরপুরে। জানে সম্ভব নয়, তবুও তারা ‘যদি, কিন্তু’তে সুখ খুঁজে। কীর্তি আর অর্জনের ফিরিস্তি দিয়ে, নানা অজুহাত দেখিয়ে ওরা চিৎকার করে যায়, একটা অবাস্তব বিশ্বাসে।

জানা নেই মাহমুদউল্লাহ বিষয়টা কিভাবে নিচ্ছেন। হয়তো বা এমন সমর্থন তার অনুপ্রেরণা হবে, আগামীর শক্তি হবে। তিনি হয়তো ভাবতেই পারেননি, মানুষ তাকে এতো ভালোবাসে।

তবে ভক্ত-সমর্থকদের এমন আন্দোলন তাঁর জন্য লজ্জারও কারণ হতে পারে। তবে ভক্তরা অপেক্ষায়, নিশ্চয়ই মাহমুদউল্লাহ করবেন এই ভালোবাসার মূল্যায়ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *