টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে হলে বড় শট খেলা জানতে হবে- এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। বড় শট খেলতে না পারলে টি-টোয়েন্টিতে সফল হওয়া যাবে না। প্রতিটি দলই তাই প্রথম পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোর জন্য পাওয়ার হিটারদেরই সবার আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায়।
কোনো কোনো দেশ তো পাওয়ার হিটিং কোচই নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। অথচ, বাংলাদেশ দলের ব্যাটারদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতাই হলো- তারা বড় শট খেলতে পারে না। টুক টুক করে রান নিতে অভ্যস্ত তারা।
যে কারণে, স্কোরটা বড় করা যায় না। হেরে যেতে হয়। কখনো রান তাড়া করতে গিয়ে, কখনও কম রান করে। কিছুদিন আগে টি-টোয়েন্টি ওপেনার লিটন দাস নিজেদের অপারগতার কথা জানিয়ে স্বীকারই করে নিয়েছেন, ‘আমরা বড় শট খেলতে পারি না।
এসব কারণেই টি-টোয়েন্টি দলটাকে নতুন করে সাজাতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তারই পরীক্ষা হয়ে গেলো জিম্বাবুয়ে সফরে। সম্পূর্ণ তারুণ্য নির্ভর একটি দল পাঠানো হলো টি-টোয়েন্টি খেলার জন্য; কিন্তু এবারও তারা ব্যর্থ।
ব্যাটারদের ব্যাট থেকে বড় কোনো শটই দেখা গেলো না। বাউন্ডারি কিংবা ছক্কা মারার মত মানসিকতাই যেন নেই ব্যাটারদের মধ্যে। এ বিষয়টা নিয়েই খুব বেশি হতাশ বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন।
তার মতে জিম্বাবুয়েতে জয়টাই ছিল বাংলাদেশের জন্য স্বাভাবিক। অথচ, বাংলাদেশের ব্যাটারদের যেন মানসিকতাই নেই একটি ছক্কা কিংবা বাউন্ডারি মারার।
হারারেতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে সুজন বলেন এখানে আমাদের জেতাটাই স্বাভাবিক ছিল। হারটা ছিল অস্বাভাবিক। আমরা জানি যে, ওভারে আমাদের ১০-১২ করে লাগবে।
কেউ দেখলাম না যে একটা ছয় মারার চেষ্টা করছে। সবাই ২-১ করে নিচ্ছে। আমি একটা স্কোর করে নিজের জায়গাটা ঠিক রাখলাম, এটা কি ওই ধরনের কিছু কি না, আমি ঠিক জানি না।
‘আপনি যদি ১০০ স্ট্রাইক রেটে খেলেন, তাহলে এখানে রান তাড়া করে জিততে পারবেন না। একজন-দুজনকে তো শট খেলতে হবে। ওদের দুজন ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইক রেট দেখুন। এখানে ভিন্ন কিছু করার প্রয়োজন ছিল না।
প্লেয়ারদের শর্ট বলকে যদি পুল করে ছক্কা মারার আত্মবিশ্বাস না থাকে, তাহলে তো মুশকিল! টি-টোয়েন্টি দলটিকে বলা হচ্ছে তারুণ্য নির্ভর, একেবারে নতুন। কিন্তু এমনটা মানতে নারাজ খালেদ মাহমুদ সুজন।
তার দাবি, দলে যাদের নেয়া হয়েছে তারা সবাই অভিজ্ঞ। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরমার।সুজন বলেন, ‘যাদের নেওয়া হয়েছে তারা সবাই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা ক্রিকেটার। সবাই পারফর্ম করেই এখানে এসেছে।
মুনিম শাহরিয়ারের কথা যদি বলেন, পারভেজের কথা বলেন- দুজনই লোকাল টি-টোয়েন্টিতে পারফর্ম করা ক্রিকেটার। আপনি সেরা পারফর্মারদেরই তো নিয়ে এসেছেন। তারা যদি পারফর্ম না করে তাহলে কী আর করার থাকে!’
তাহলে সামনে করণীয় কী? কিভাবে এই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব? জানতে চাইলে সুজন বলেন, ‘করণীয়টা কী এটা ক্রিকেটাররাই বলতে পারবে। এমন না যে ছেলেরা এখন দলে আসছে আর যাচ্ছে।
তারা একটা সময়ের জন্য সুযোগ পাচ্ছে। তারা জানে যে তাদের জায়গা নিয়ে এত কাড়াকাড়ি নেই। তাদের ঠিকঠাক সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এমন অবস্থায় তো মন খুলে খেলা উচিত। আমি ওই মন খুলে খেলাটা দেখতে পাচ্ছি না।’