Breaking News

ওপেনার আর ওয়ান ডাউন লিটন দাসের ব্যাটিং পার্থক্য কতটা দেখে নেওয়া যাক পরিসংখ্যান

ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সীমিত ওভারের ফরম্যাটে তাকে মূলত ওপেনার হিসেবেই খেলানো হয়েছে। ক্যারিয়ারের অধিকাংশ ম্যাচেই ওপেনার হিসেবেই খেলেছেন লিটন দাস। তাই ধরা হচ্ছে তিনি প্রথাগত ওপেনার।

কিন্তু সময়ের প্রবাহমানতায় এখন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তাকে খেলানো হচ্ছে তিন নম্বরে এবং অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিশ্বকাপেও লিটন দাসকে ওয়ান ডাউনে খেলতে দেখা যাবে।

কেন লিটনকে ওপেনার হিসেবে খেলানো হচ্ছে না? ওয়ান ডাউনে ব্যাটিং করানো হচ্ছে? তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিম দলে নেই। টেকনিক,

ব্যাটিং স্কিল আর শট খেলার দক্ষতা ও পারদর্শিতাকে মানদণ্ড ধরলে তিনিই দলের এক নম্বর উইলোবাজ । তাহলে সেরা ব্যাটারকে কেন ১২০ বলের ম্যাচে সবচেয়ে বেশি বল খেলার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না? ওপেনার হিসেবে খেলানোর অর্থ বেশি বল মোকাবিলার অবারিত সুযোগ।

কেন লিটনকে সে সুযোগ দেয় হচ্ছে না? তার বদলে ওয়ান ডাউন খেলানো হচ্ছে? তা নিয়ে রাজ্যের হৈ চৈ। নানা তীর্যক কথা-বার্তা। এখন টিম বাংলাদেশে সম্ভাব্য ওপেনার হিসেবে যাদের খেলানো হচ্ছে এবং যে কয়জনকে ‘সম্ভাব্য’ ওপেনার হিসেবে ধরা হচ্ছে,

সেই নাজমুল হোসেন শান্ত, সৌম্য সরকার আর মেহেদি হাসান মিরাজের তুলনায় লিটন দাসের শট খেলার পারদর্শিতা অনেক বেশি। উইকেটের সামনে অফ ও অন সাইডে সমান দক্ষতায় ফ্রি স্ট্রোক প্লে করতে পারেন লিটন।

পয়েন্ট, কভার মিড অফ, মিড অন, মিড উইকেট, স্কোয়ার লেগ ও ফাইন লেগ অঞ্চল দিয়ে ক্রিকেট ব্যাকরণে যত শট আছে, লিটন তার প্রায় সবগুলোই খুব ভাল খেলতে পারেন।

ড্রাইভ, কাট, পুল, ফ্লিক, গ্ল্যান্স প্রতিটি ক্রিকেটীয় শটের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ আছে বেশ। কাজেই লিটন বেশি বল খেললে রানের চাকা সচল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক।

আর দলে রানের গতি শুরু থেকে সচল থাকার অর্থ স্কোরলাইন বড় হওয়া। সে কারণেই বেশিরভাগ ভক্ত, সমর্থক ও অনুরাগি লিটনকে ওপেনার হিসেবেই দেখতে চান।

তাদের ধারনা লিটন ওপেনার হিসেবে খেললে নিজের সেরাটা উপহার দিতে পারবেন এবং টিম বাংলাদেশের উপকার হবে। টেকনিক, স্কিল, মেধা, সামর্থ্য হিসেব করলে লিটন দাস উদ্বোধনী ব্যাটার হিসেবেও বাকিদের চেয়ে যোগ্য ও এগিয়ে;

কিন্তু তার আগে খুঁটিয়ে দেখতে হবে সত্যিই কি লিটন দাস ওপেনার হিসেবে তিন নম্বর পজিসনের চেয়ে বেশি ভাল খেলেন? উদ্বোধনী ব্যাটার লিটন দাস আর ওয়ান ডাউন লিটন দাসের পরিসংখ্যানের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলেই এর উত্তর মিলবে।

আসুন দেখে নেওয়া যাক পরিসংখ্যান: এক ও দুই নম্বর পজিসন মিলে মানে ওপেনার হিসেবে লিটন দাস এখন পর্যন্ত ৪১ ম্যাচ খেলেছেন। যাতে তার মোট রান ৮৪২। পঞ্চাশ ৫টি। সর্বোচ্চ ৬১। গড় ২১.৩০। স্ট্রাইকরেট ১৩২.৭৪।

আর তিন নম্বরে ১২ ম্যাচে লিটনের মোট রান ৩৪৪। সর্বোচ্চ ৬৯। গড় ২৮.৬৬। স্ট্রাইকরেট ১২৫.৫৪। পঞ্চাশ দুটি। পরিসংখ্যান পরিষ্কার সাক্ষী দিচ্ছে ওপেনার আর তিন নম্বর লিটন দাসের মধ্যে খুব বড় কোন পার্থক্য নেই।

বরং তার ম্যাচ পিছু রান ওপেনিংয়ের (২০.৫৩) চেয়ে তিন নম্বরেই (২৮.৬৬) বেশি এবং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় (৬৯) ইনিংসটিও কিন্তু ওয়ান ডাউনে নেমেই।

তবে ওপেনার লিটনের স্ট্রাইকরেটটা বেশি । অর্থাৎ শুরু থেকে ব্যাট করতে পারলে স্ট্রাইকরেটটা ভাল থাকে লিটনের। মূলতঃ এটাই পার্থক্য। সেটার কারণও পরিষ্কার। ইনিংসের শুরু থেকে খেলতে পারলে লিটনের বল বেশি খেলার সুযোগ থাকছে।

তাই তিনি নিজের স্ট্রাইকরেটটা বাড়াতে পারছেন। সবচেয়ে বড় কথা পাওয়ার প্লে’র পুরোটা কাজে লাগিয়ে প্রথম ৬ ওভারে একটু বাড়তি ঝুঁকি নিয়ে বাহারি আর আক্রমণাত্মক শট খেলে রানের গতি বাড়াতে পারছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *