Breaking News

এত বিতর্কের পর সাকিবই কেন বার বার বিসিবির ‘সেরা পছন্দ’!

এত বিতর্কের পর সাকিবই কেন বার বার বিসিবির ‘সেরা পছন্দ’! প্রশ্নটা সাধারণ ক্রিকেট প্রেমীদের মনে থাকতেই পারে। বল ও ব্যাট হাতে নজর কাড়া পারফরমেন্স, প্রতিপক্ষ দলকে নাকানি-চুবানি খাওয়ানো এবং দল জেতানো চৌকষ নৈপুণ্য প্রদর্শনে তার জুড়ি মেলা ভার।

টেস্ট ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের সর্বাধিক জয়ের নায়ক, স্বার্থক রূপকার তিনি। সবচেয়ে বেশিবার ম্যাচ জেতানোর পাশাপাশি সর্বাধিক ম্যাচ সেরার পুরস্কারও তার হাতেই উঠেছে।

সন্দেহাতীতভাবে সাকিব আল হাসানই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা পারফরমার। স্বার্থক অলরাউন্ডার। একজন সব্যসাচী ক্রিকেটারের প্রতিমূর্তি। জন গণ নন্দিত।

আবার নানা অখেলোয়াড়োচিত আচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে নিন্দিত এবং বিতর্কিতও। প্রায়ই অখেলোয়াড়োচিত ও দৃষ্টিকটু আচরণ তার সঙ্গী হয়ে আছে। তবে সাকিব আল হাসান প্রথম শৃঙ্খলা ভঙ্গের দোষে দোষী হন ২০১৪ সালে।

জাতীয় দলের এক ম্যাচ চলাকালিন টিভি ক্যামেরায় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে প্রথমে ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ হন। একই বছর অর্থ্যাৎ ২০১৪ সালেই ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগ সিপিএলে বিনা অনুমতিতে খেলতে যাওয়া নিয়ে হলেন ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ।

এরপর ২০১৯ সালে জুয়াড়িদের প্রস্তাব পেয়েও কাউকে না জানানোর কারণে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন সাকিব। মাঝে ২০২১ সালের প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর বিপক্ষে এক ক্লাব ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রকাশ্যে উইকেটে লাথি মেরে রীতিমত বিতর্কের জন্ম দেন। যদিও শেষ পর্যন্ত চুক্তি ভেঙ্গেছেন।

তারপরও এবার বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তি করে নতুন বিতর্কের জন্মদেন সাকিব। এর পাশাপাশি নানা ছুতোয় প্রায় সিরিজেই কোনো না কোনো ফরম্যাটে না খেলাটাও একটা অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে তার।

কোনো না কোনো কারণ দেখিয়ে হয় টেস্ট, না হয় ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি সিরিজের যে কোন একটি না খেলে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড, বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যাচ্ছে সাকিবকে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে।

প্রতিটি সিরিজ ও সফরের আগে সাকিবকে পাওয়া যাবে কি না- সে চিন্তায় ঘুম হারাম হয়ে যায় বিসিবি কর্মকর্তা ও টিম ম্যানেজমেন্টের। মাঠের পারফরমেন্স যত ভালোই হোক ব্যাট ও বল হাতে তিনি যত উজ্জ্বলই হোন না কেন আচরণ গত কারনই যদি হয় হেঁয়ালি, খামখেয়ালিপনায় পরিপূর্ণ।

এর আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণ জন্ম দিতে যিনি রীতিমত পারঙ্গম তেমন একজনকে আবার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক করা কতটা যুক্তিযুক্ত?প্রশ্ন অনেকের। আজ শনিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনেও ঘুরেফিরে এ প্রশ্নই উঠলো।

বিসিবির অন্যতম নীতি নির্ধারক শীর্ষ কর্মকর্তা ও ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসেরও সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে নাভিঃশ্বাস উঠেছে।  তারপরও প্রথমে মুমিনুলের পরিবর্তে টেস্ট আর এখন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গায় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাকিবের কাধেই ওঠলো অধিনায়কত্বের ভার।

বোঝাই যায় সাকিবের ওপর সর্বোচ্চ আস্থা ও বিশ্বাস বিসিবির। সাকিবই সবচেয়ে বড় নির্ভরতা তাদের জন্য। জালাল ইউনুস বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘সাকিব আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাকিবকেই অধিনায়ক করার পরিকল্পনা ছিল।

তাকে আমাদের প্রয়োজন।’ এর খানিক পরেই আরেক প্রশ্নের জবাবে সাকিবকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘হি ইজ আওয়ার বেস্ট প্লেয়ার। আমরা তাকে ওউন করি। সে আমাদের বোর্ডের বা দেশের বাইরের কেউ না।

কেন এই আস্থা ও বিশ্বাস? বিসিবি কেন বারবার সাকিবের দিকেই হাত বাড়াচ্ছে?

কারণ খুঁজতে গিয়ে বেশিরভাগ ভক্ত, সমর্থক ও অনুরাগিই বলে উঠবেন, ‘আরে সাকিবকে না দিয়ে আর কাকে অধিনায়ক করা হবে? সাকিবের মত এমন উঁচুমার্গের বিশ্বমানের পারফরমার আর কেউ আছে নাকি বাংলাদেশ দলে?

সাকিবের মত ব্যাট ও বল হাতে ম্যাচ জেতানোর পারফরমার যে দ্বিতীয়টি আর নেই বাংলাদেশ দলে! মেধা, প্রজ্ঞা, জায়গামত পারফর্ম করার ক্ষমতাও যে সাকিবের অনেক অনেক বেশি! তাইতো পারফরমার সাকিব অতুলণীয়।

তার তুলনা তিনি নিজেই। আর তাই তিনি পারেন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে। হ্যাঁ, এগুলো অবশ্যই সাকিবমুখো হবার কারণ। তবে সেটাই মূল কারণ নয়। আসল কারণটা ভিন্ন। সাকিবের মানসিক দৃঢ়তা প্রচন্ড।

অন্য যে কারো চেয়ে বেশি। শৃঙ্খলা ভঙ্গ নিষিদ্ধ হওয়া, কোনো সিরিজ না খেলে ছুটিতে চলে গিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্কের মুখে পড়ার পরও সাকিব অবিচল। নির্বিকার। নির্ভীক। কোন নেতিবাচক কিছুই তাকে এতটুকু টলাতে পারে না। পারবেও না হয়তো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *