গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। হেরেছিল ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে। এবার যেন সেই হারের ‘প্রতিশোধ’ নিলো লঙ্কানরা। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সুপার ফোর পর্বের প্রথম ম্যাচে শুভসূচনা করলো দাসুন শানাকার দল।
আফগানিস্তানকে হারালো ৪ উইকেট আর ৫ বল হাতে রেখে। ১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা করেন লঙ্কান দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস আর পাথুম নিশাঙ্কা। ৩৯ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন তারা।
১৯ বলে ২ চার আর ৩ ছক্কায় ৩৬ রানের ঝড় তুলে মেন্ডিস হন নাভিন উল হকের শিকার। এরপর নিশাঙ্কাকে (২৮ বলে ৩৫) উইকেটরক্ষকের দারুণ ক্যাচ বানান আফগান অফস্পিনার মুজিব উর রহমান।
উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেননি চারিথ আসালাঙ্কা। ১৪ বলে মাত্র ৮ রান করা এই ব্যাটারকে বোল্ড করেন নাবি। কপাল বোধ হয় একেই বলে! বাংলাদেশের বিপক্ষে কুশল মেন্ডিস একাই পেয়েছিলেন ৫টি জীবন।
এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই বলে বেঁচে যান লঙ্কান দুই ব্যাটার। ইনিংসের ১২তম ওভারে মোহাম্মদ নাবি চারিথ আসালাঙ্কাকে (১৪ বলে ৮) বোল্ড করলে ৯৪ রানে ৩ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারালে বেশ বিপদেই পড়ে যেতো লঙ্কানরা।
নাবির ওই ওভারেই শেষ বলে উঠেছিল ক্যাচ। কিন্তু গুনাথিলাকার সেই ক্যাচ ফাইন লেগে ফেলে দেন করিম জানাত। তার পরের ওভারের প্রথম বলে রশিদ খানের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। আম্পায়ারও আবেদনে আঙুল তুলে দেন।
কিন্তু রিভিউ নিয়ে জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। গুনাথিলাকা ১৩ আর শানাকা জীবন পান ব্যক্তিগত ১ রানে। যদিও শানাকা সেই জীবন কাজে লাগাতে পারেননি। মুজিবের দ্বিতীয় শিকার হন ৯ বলে ১০ করেই।
১৬তম ওভারে নাভিন উল হকের ওপর চড়াও হন ভানুকা রাজাপাকসে। প্রথম তিন বলে দুটি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কা হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। ওভারের শেষ বলেই আউট হতে পারতেন রাজাপাকসে। এবার ডিপকভারে ড্রপ হয় সহজ ক্যাচ।
পরের ওভারে রশিদ খান বোল্ড করেন ভয়ংকর গুনাথিলাকাকে। ২০ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৩ রান আসে গুনাথিলকার ব্যাট থেকে। ১৫১ রানে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তবে ততক্ষণে জয়ের পথ অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। ২০ বলে দরকার ছিল ২৫ রান।
ভানুকা রাজাপাকসে আর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা দলকে প্রায় জয়ের বন্দরে নিয়ে আসেন। রাজাপাকসে (১৪ বলে ৩১) অবশ্য শেষ সময়ে এসে বোল্ড হন নাভিনের বলে। তবে তখন ৯ বলে মাত্র ২ রান দরকার লঙ্কানদের।
হাসারাঙ্গা ৯ বলে ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। আফগানিস্তানের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন মুজিব উর রহমান। ৪ ওভারে ৩০ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন এই অফস্পিনার।
এর আগে রহমানুল্লাহ গুরবাজ যে ইনিংসটা খেলে দিয়েছেন, তাতে মনে হচ্ছিল আফগানিস্তানের সংগ্রহ দুইশর কাছাকাছি হয়ে যাবে। কিন্তু শেষ ৫ ওভারে দারুণ বোলিং করে আফগানদের বিশাল পুঁজি গড়তে দেয়নি শ্রীলঙ্কা।
শেষ ৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্তান তুলতে পারে মাত্র ৩৭ রান। সবমিলিয়ে ২০ ওভার শেষে আফগানদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ১৭৫ রান।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আফগানিস্তানকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায় শ্রীলঙ্কা। রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাটে উদ্বোধনী জুটিতে উড়ন্ত সূচনা পায় আফগানরা।
প্রথম ২ ওভারে মাত্র ১১ রান আসার পর তৃতীয় ওভারেই চড়াও হন গুরবাজ। লঙ্কান অফস্পিনার মাহিশ থিকশানাকে টানা দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকান ডানহাতি এই ব্যাটার। পরের ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্ডোকে হাঁকান আরও একটি ছক্কা ও চার।