বয়স ১৪ বছর। ছোট্ট নাসিম শাহকে দেখে আব্দুল কাদির একাডেমির পরিচালক সুলেইমান কাদির জানতে চান, ‘কী করতে চাও তুমি? পাকিস্তানের লেগস্পিনার কাদিরের ছেলে সুলেইমানের কাছে তাকে এনেছিলেন নাসিমের এক চাচা।
প্রশ্নটা শুনে দ্বিতীয় চিন্তা না করে নাসিমের উত্তর ছিল ‘বোলিং’। এত দিন খাইবারপাখতুনখোয়ার পাহাড়ঘেরা লোয়ার দিরে টেপ টেনিসে বল করে এসেছেন নাসিম। লাহোরের সেই একাডেমিতে প্রথমবার হাতে নেন ক্রিকেট বল।
পায়জামা পরে খালি পায়ে আগুনে গতির কয়েকটা বল করার পরই অভিজ্ঞ সুলেইমান বুঝে যান, রত্ন পেয়ে গেছেন তিনি। সেই সুলেইমানই গড়েপিটে দুরন্ত পেসার বানান নাসিমকে।
অনূর্ধ্ব-১৬ তারপর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের গণ্ডি পেরিয়ে নাসিম জাতীয় দলে জায়গা করে নেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। নাসিমকে ওয়ানডে খেলতে অপেক্ষা করতে হয়েছে তিন বছর।
টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক এশিয়া কাপেই। তাও প্রথম ম্যাচে প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। তবে স্নায়ুর চাপে না ভুগে প্রথম ওভারটা যেভাবে করেছেন, তাতেই ইঙ্গিত এই অঙ্গনে ধূমকেতু হয়ে হারিয়ে যেতে আসেননি তিনি।
দ্বিতীয় বলে বোল্ড করেন লোকেশ রাহুলকে। চতুর্থ বলে বিরাট কোহলিও ক্যাচ তুলেছিলেন স্লিপে। ফখর জামান সেটা তালুবন্দি করলে, কে জানে সেদিন জিততেও পারত পাকিস্তান।
ম্যাচ শেষে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অধিনায়ক বাবর আজম, ‘শাহীন শাহ আফ্রিদি নেই ইনজুরির জন্য। তবে ওর অভাবটা বুঝতেই দেয়নি নাসিম। প্রথম ম্যাচের পর গতকাল হংকংয়ের সঙ্গেও ২ উইকেটে পেয়েছেন নাসিম।
কাদির একাডেমিতে তার প্রথম কোচ সুলেইমান উচ্ছ্বসিত শিষ্যের এমন নৈপুণ্যে, ‘টেস্ট অভিষেকের আগের রাতে খবর আসে, মারা গেছে নাসিমের মা। ছেলেটা তখন ঘুমাচ্ছিল।
এমন কঠিন একটা শোকের ধাক্কা সামলে খেলে গেছে ও। যত দিন যাচ্ছে ততই পরিণত হয়ে উঠছে। এশিয়া কাপে নতুন করে চেনাচ্ছে নিজেকে। ১৩ টেস্টে নাসিমের উইকেট ৩৩টি।
তিন ওয়ানডেতে ১০ আর দুই টি-টোয়েন্টিতে শিকার ৪ উইকেট।বয়স ২০ বছর পার হয়নি এখনো। ইনজুরি এড়িয়ে খেলতে পারলে পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ তারকা যে তিনিই হবেন তাতে সন্দেহ নেই সুলেইমানের, ‘ওর উচ্চতা ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি।
চোটের জন্য দলের বাইরে ছিল অনেক দিন। ওয়াকার ইউনুস, মুদাসসর নজররা চোটপ্রবণতাটা বুঝতে পেরে পরিবর্তন এনেছেন কিছুটা। আমার বিশ্বাস, ইনজুরি এড়িয়ে চলতে পারলে অনেক দূর যাবে ও।