এ বারের বিশ্বকাপের ৩২টি দলে অংশ নেওয়া অধিকাংশ ফুটবলার বিশ্বের বিভিন্ন ক্লাবে খেলেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, বুন্দেশলিগার মতো প্রথম সারির লিগগুলোতে নিয়মিত খেলেন তারা। তাই পেশাদার ফুটবল মৌসুমের মাঝে
বিশ্বকাপ আয়োজন করায় আপত্তি জানিয়েছিল ক্লাবগুলো। তাদের রাজি করাতে আর্থিক চুক্তিতে যেতে হয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফাকে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য ক্লাবগুলোকে অর্থ দেবে ফিফা।
যে ক্লাবের যত বেশি ফুটবলার বিশ্বকাপের দলে ছিলেন, সেই ক্লাব তত বেশি অর্থ পাবে। বিশ্বকাপ ফুটবল সাধারণত হয় জুন-জুলাই মাসে। বছরের সে সময় ক্লাব ফুটবলের মৌসুম শুরু হয় না। ফলে সমস্যাও হয় না তাদের।
কিন্তু কাতারের আবহাওয়ার জন্য এ বারের বিশ্বকাপের সময় পরিবর্তন করতে হয়েছে। দোহার গ্রীষ্ম এড়াতে বিশ্বকাপ হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে। বছরের এই সময় ক্লাব ফুটবলের ভরা মৌসুম। সব দেশেই লিগের খেলা চলছে।
প্রতিযোগিতার মাঝখানে ফুটবলারদের ছেড়ে দিলে সমস্যা হতে পারে। পরের পর্বে প্রভাব পড়তে পারে দলের ছন্দে বা পারফরম্যান্সে। তাই প্রাথমিকভাবে ক্লাবগুলো এ সময়ে বিশ্বকাপের জন্য ফুটবলারদের ছাড়তে রাজি ছিল না।
কারণ ক্লাবগুলো কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ফুটবলারদের জন্য। সমস্যা সমাধানে ক্লাবগুলোকে অর্থের প্রস্তাব দেয় ফিফা। প্রত্যেক ফুটবলারকে ছাড়ার জন্য ক্লাবগুলোকে ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেওয়া হবে।
প্রত্যেক ফুটবলার বিশ্বকাপের জন্য যত দিন ক্লাবের দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন না, সেই প্রতি দিনের জন্য অর্থ দেওয়া হবে। এই অর্থের অঙ্ক ১০ হাজার ডলার। ফিফার এক কর্তা জানান, ক্লাবগুলোর চাহিদা মেটাতে এ বারের
বিশ্বকাপের জন্য ফিফাকে অতিরিক্ত ১৭২৯ কোটি টাকার বেশি ব্যবস্থা করতে হয়েছে। ফিফা এখনও পর্যন্ত যে হিসাব করেছে, তাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ২০ ক্লাবকে টাকা দিতে হবে। সব থেকে কম টাকা পাবে বোর্নমাউথ।
তারা পাবে ২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। সব থেকে বেশি টাকা পাবে ম্যানচেস্টার সিটি। তারা পাবে ৪০ লাখ ডলার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চেলসি। তারা পাবে প্রায় ২৩ কোটি টাকার বেশি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।
তারা পাবে প্রায় ২২ কোটি টাকা। প্রাপ্তির নিরিখে প্রথম ১০টি ক্লাবের টটেনহ্যাম প্রায় ২০ কোটি, লিভারপুল প্রায় ১৫ কোটি, আর্সেনাল প্রায় ১৩ কোটি, উলভস্ প্রায় ১২ কোটি ৭৪ লাখ, লেস্টার সিটি ১১ কোটি ৫৮ লাখ, ব্রাইটন ১১ কোটি ১৭ লাখ, ফুলহ্যাম ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাবে।