টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর আগে একবারই নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ দল। ভারতের ধর্মশালায় জেতা সেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় তামিম ইকবাল মনে করছেন, আজ হোবার্টেও ডাচদের হারাবে বাংলাদেশ।
এই জয় টুর্নামেন্টের বাকি অংশে সাহসও জোগাবে দলকে। ধর্মশালায় ৫৮ বলে ৮৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন তামিম। তবু ৭ উইকেটে ১৫৩ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই ৮ রানে ম্যাচ জয়ের পথে যথেষ্ট স্নায়ুক্ষয় হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজাদের।
তবে হোবার্টে আরো ভালো কিছু আশা করছেন তামিম, বাজি ধরেছেন আফিফ হোসেনের ওপর, ‘আমি আগ্রহী আফিফ হোসেনের ব্যাপারে। সম্প্রতি ও ভালো খেলছে। শেষ কয়েকটি ম্যাচে হয়তো রান করেনি। বিশেষ করে (নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত) ত্রিদেশীয় সিরিজে।
তবে আমি মনে করি আফিফ দারুণ প্রতিভাবান একজন ক্রিকেটার। ওর ব্যাটিং পজিশনটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলের ব্যাটিং অর্ডারে আফিফের জায়গাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ আফ্রিকার যেমন ডেভিড মিলার যখন ছন্দে থাকে,
তখন সম্ভাব্য স্কোর ১৫০ রান হলে ও ১৬০ বানিয়ে দেবে। বাংলাদেশ দলের জন্য সেটা করার সামর্থ্য আছে আফিফের। ওর মধ্যে একটা স্পেশাল ব্যাপার আছে। ব্যাটাররা সাধারণত দুই ধরনের হয়—কেউ পরিস্থিতি বুঝে খেলে, কেউ নিজের খেলাটা খেলে।
যেমন ধরুন, দলের স্কোর যখন ২৩ রানে ৩ উইকেট তখন অনেক ব্যাটার ক্রিজে এসে একটু সতর্ক হয়ে খেলবে। এরপর বড় শটে যাবে। কিন্তু আফিফ হলো সেই ক্রিকেটার, যে কিনা যেকোনো পরিস্থিতিতে নিজের ব্যাটিংটাই করবে।
ঠিক এ কাজটাই করে ভারতের সূর্যকুমার যাদব। আমি আফিফকে ওর সঙ্গে তুলনা করছি না। তবে মানসিকতা, খেলার ধরনে দুজনের মিল আছে। এতে ঝুঁকি আছে। আফিফ সব সময় সফল হবে না।
এটা নিয়ে মানুষ কথাবার্তা বলবে। হয়তো বলবে, দলের এই অবস্থায় মারতে গিয়ে কেন আউট হলো! কিন্তু ওর এই মানসিকতাই আমার খুব পছন্দ। লিটন দাসের সামনেও এবারের বিশ্বকাপ বড় সুযোগ বলে মনে করছেন তামিম, ‘বড় তারকা হওয়ার সব উপাদানই আছে লিটন দাসের মধ্যে।
ফর্মে আছে। ওকে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এটা ওর জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর বড় তারকা হতে হলে বড় আসরে বড় দলের বিপক্ষে রান করতে হবে। লিটন যে পজিশনে ব্যাটিং করে, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশকে জিততে হলে ওর ব্যাট থেকে বড় রান দরকার। দুই ফরম্যাটের বিশ্বকাপ খেলেছেন। তাই জানেন এমন আসরে শুরুর চাপ কাটিয়ে ওঠা জরুরি। আর সেই চাপ থেকে মুক্তির পথ কাকতালীয়ভাবে সাকিব আল হাসানরা পেয়ে গেছেন বলে মনে করেন তামিম,
‘আমার মনে হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যাবে প্রথম দুই ম্যাচে। এই দুই ম্যাচের একটা জিততে হবে। বিশ্বকাপে কোনো প্রতিপক্ষই সহজ নয়। তবে বিশ্বকাপ মিশন শুরু হচ্ছে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে।
আমার মনে হয়, এর চেয়ে ভালো সূচি হতে পারে না। আবারও বলছি, নেদারল্যান্ডস ভালো দল। এমন না যে নেমেই বাংলাদেশ জিতে যাবে। বাংলাদেশকে কঠোর পরিশ্রম করেই ম্যাচটি জিততে হবে।
এই ম্যাচটি জিততে পারলে হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস আবার ফিরে পাবে বাংলাদেশ। জিতলে হয় কি, মনে যে ছোট ছোট সংশয় থাকে, সেগুলো সরে যায়।
মনে জমে থাকা সংশয়ের মেঘ প্রথম ম্যাচে সরে গেলে তামিম আশাবাদী, “বাংলাদেশের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা সবচেয়ে জরুরি। এই মুহূর্তে মানুষ অনেক কথা বলছে।
তবে একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, একটা জয় সবার মনে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনবে। ‘ইনটেন্ট’, ‘ইমপ্যাক্ট’ নিয়ে যত কথা হচ্ছে, সব হারিয়ে যাবে। তখন ভালো ফল নিয়েই দেশে ফিরবে বাংলাদেশ। ”