Breaking News

শেষ ৩১ ম্যাচে ৯ বার ওপেনিং জুটি পরিবর্তন, তবুও ব্যর্থ টিম ম্যানেজমেন্ট

শেষ ৩১ ম্যাচে ৯ বার করা হয়েছে ওপেনিং জুটি পরিবর্তন কিন্তু তবুও ব্যর্থ হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। তামিম ইকবাল হয়তো মুচকি-মুচকি হাসছেন! নাহ, তা কী করে হয়। স্বদেশের, সতীর্থদের ব্যর্থতায় তামিমের অন্তত খুশি হওয়ার কথা নয়।

তবে বাঁহাতি এ ওপেনারের ভক্তকুল একটা তৃপ্তির ঢেঁকুর হয়তো তুলছেন।  কিছুটা অভিমান, স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচনার বিষম চাপ, হয়তোবা বাকি দুই ফরম্যাটে মনোযোগ দিতে দুই বছরের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক টি-২০ খেলছেন না তামিম।

এ ফরম্যাট থেকে এক রকম নির্বাসনেই যেন রয়েছেন তিনি। এই যেমন মাহমুদউল্লাহরা যখন ডমিনিকায় টি-২০ সিরিজ খেলছেন, তখন ক্যারিবিয়ানে থেকেও দলের সঙ্গে নেই তামিম।

বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক কতটা মানসিক স্বস্তিতে আছেন বলা কঠিন। তবে তার অনুপস্থিতি যে টি-২০ তে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টকে পাগলপ্রায় করে তুলেছে, এটা নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়।

ওপেনিংয়ে অভিজ্ঞ এ ওপেনারের অভাব হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন টাইগাররা। আশ্রয় পেতে, সমাধান খুঁজতে যে ঢালেই চড়েছেন নির্বাচক-কোচ-অধিনায়ক, কাকতালীয়ভাবে সব ঢালই ভেঙে পড়েছে। কত কত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হলো, কিন্তু সবকিছুর যোগফল শূন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ফরম্যাটে দেশের একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান তামিমকে ছাড়া বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিটা হয়ে গেছে ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’। কদিন পরপরই নতুন অতিথি আসছেন চেয়ারে, এবং ব্যর্থতার পদভারে আয়োজকদের ডুবিয়ে যাচ্ছেন।

পরিসংখ্যানে চোখ রাখলেই দেখা যাবে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের কঙ্কালসার অবস্থার জলজ্যান্ত প্রমাণ। তামিম সর্বশেষ টি-২০ খেলেছেন ২০২০ সালের ৯ মার্চ। তারপর এ ফরম্যাটে ৩১ ম্যাচ (২ জুলাইয়ের ম্যাচসহ) খেলেছে বাংলাদেশ দল।

যার মধ্যে ৯টি পৃথক জুটিকে দিয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কতটা অস্থিরতার স্বাক্ষর বহন করছে এমন ঘন ঘন পরিবর্তন। দুই প্রান্তে বাঁহাতি, ডানহাতি-বাঁহাতি, দুইজন ডানহাতি—নানা কম্বিনেশনে ওপেনিং জুটি গড়া হয়েছে কিন্তু লাভের অঙ্ক দেখা যায়নি।

গত শনিবার ডমিনিকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচে ওপেনিং করেছেন মুনিম শাহরিয়ার ও এনামুল হক বিজয়। তারা গত ৩১ ম্যাচে বাংলাদেশের নবম ওপেনিং জুটি।

বলা বাহুল্য, তাদের যুগলবন্দির যবনিকাপাত হয়েছে ইনিংসের তৃতীয় বলেই, স্কোরবোর্ডে তখন ২ রান। এর আগে নাঈম শেখ, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, শেখ মেহেদী হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসানকে ওপেনারের ভূমিকায় দেখা গেছে।

তাদের মধ্যে নাঈম শেখ, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত এখন টি-২০ দলেই নেই। তামিমহীন সময়টার সিংহভাগ ম্যাচেই টিম ম্যানেজমেন্ট পড়ে ছিল ভুল পথে।

টেকনিকে সমস্যা, পাওয়ার প্লে-তেও ক্রমাগত ডট বলার বিরক্তিকর ব্যাটিং নিয়ে টি-২০ দলের ওপেনার হওয়া নাঈম শেখ ‘মুরুভূমির মরীচিকা’ উপহার দিয়েছেন কর্তাদের। এখন জাতীয় দলের ধারেকাছেও নেই এই বাঁহাতি ওপেনার।

অথচ তামিম উত্তর যুগে ক্ষুদে ফরম্যাটে বাংলাদেশের ভরসা হতে পারতেন লিটন দাস-সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটি। কিন্তু তাদের ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ১ ইনিংস, ৮ রান করেই বিচ্ছিন্ন হয়েছেন তারা।

লিটন আছেন ঠিকই, কিন্তু ফর্ম হারিয়ে সৌম্য এখন হাবুডুবু খাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটেও। ওপেনিং জুটি নিয়ে তীব্র সংকট, খুবই স্পষ্ট। সামনেই টি-২০ বিশ্বকাপ, তার আগে এর সমাধান হবে, ওপেনাররা থিতু হবেন- এমন আশা করাও কঠিন।

এখন কী তবে তামিমের মন গলানোর পথেই হাঁটবেন বোর্ড কর্তারা? তা অবশ্য সময়ই বলে দেবে। কিন্তু তাতেও কি কোন কাজ হবে ? প্রশ্নটা থেকেই যাই। দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি হারার পর তামিমের রহস্যময় স্ট্যাটাস থেকে থেকে বোঝার ওপাই নেই যে তিনি এই ফর্মেটে হইত আর ফিরবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *