Breaking News

‘রশিদ খান’ স্বপ্ন পূরণ করলেন সেই প্রতিবন্ধী ভক্তের !

বাংলাদেশ ও আফগানিস্থানের মধ্যকার চলমান ২য় টি-টুয়েন্টি খেলার মধ্যে ঘটে যাই এক বিস্ময়কর ঘটনা মাঠের লড়াই ততক্ষণে শেষ। প্রতিযোগিতার আমেজও শেষ। এর পর থেকেই রশিদ খানের মুখে চওড়া হাসি।

বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করছেন।কাঁধে হাত রেখে খুনসুটি করছেন। খেলার মাঠে গতিময় লেগ স্পিন দিয়ে ব্যাটসম্যানদের কাবু করা সেই ব্যক্তিত্বের ছিটেফোঁটাও মাঠের বাইরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।

তিন ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজজুড়ে যারা অনেকটা শত্রুর মতোই ছিল, তাদের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছিলেন রশিদ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে কাল বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের মধ্যকার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচের পর এই ছবিটি যেন ক্রিকেটীয় চেতনার বিজ্ঞাপন।

শুধু কি তা–ই! মাঠে খেলা দেখতে আসা এক প্রতিবন্ধী ক্রিকেট ভক্তের দাবিও রশিদ যেভাবে মেটালেন সেটাও ছিল চোখে পড়ার মতো।আল আমিনকে নিজের স্বাক্ষর করা একটি বল উপহার দেন রশিদ খান।

খেলা ততক্ষণে শেষ। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান দলের ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুম ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। এমন সময় খেলা দেখতে আসা আল আমিন নামের এক প্রতিবন্ধী ক্রিকেটভক্ত ঢুকে পড়েন সাকিব-মাহমুদউল্লাহদের ভিড়ে।

বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা প্রথমে হকচকিয়ে গেলেও প্রতিবন্ধী ভক্তের সঙ্গে সাকিবকে ছবি তুলতে দেখা যায়।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের আরেক পাশে তখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন রশিদ খান।

আল আমিন তখন রশিদের অপেক্ষায় মাঠের এক কোণে ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন শেষ হতে না হতেই রশিদকে জড়িয়ে ধরে তাঁর সঙ্গে ক্রিকেট খেলার আবদার করেন আল আমিন।আল আমিন তাঁর ডান হাতের কবজি সোজা করতে পারেন না। কথাও বলতে পারেন না ঠিকঠাক।

হাতের ইশারা দিয়েই রশিদকে বোঝালেন, তারকা এই লেগ স্পিনারের বলে ব্যাট করতে চান। ভক্তের আবদার মেটাতে রশিদ তাঁকে আফগানিস্তান দলের ড্রেসিংরুমে নিয়ে যান। এরপর নিজের স্বাক্ষর করা একটি বল উপহার দেন। নিজের দেশে সমর্থকদের সামনে খেলতে চান রশিদ খান।

সাংবাদিকদের আবদার মেটাতেও রশিদের কোনো আপত্তি নেই। সিরিজ শেষে জৈব সুরক্ষাবলয় ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশের সাংবাদিকদের সরাসরি প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। ২৩ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনারকে তাঁর বয়স নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা কটূক্তি শুনতে হয়।

কাল নিজের বয়স নিয়ে অস্বস্তিকর প্রশ্নের উত্তরও হাসিমুখে দিয়েছেন রশিদ, ‘এসব বিষয় আমি গুরুত্ব দিই না। আপনি বেশির ভাগ সময়ই এসব নেতিবাচক খবরই দেখতে পাবেন। আমি এসবের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

এখন এসব শুনলে উল্টো অনুপ্রাণিত হই, আরও ভালো পারফর্ম করতে চাই।’ আফগান গর্বকে আস্তিনে বেঁধে চলা রশিদ প্রতিটি ম্যাচ খেলেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের স্বপ্ন বুকে নিয়ে। আল আমিন ডান হাতের কবজি সোজা করতে পারেন না।

নিজ দেশের ক্রিকেট নিয়ে স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে যেন চোখ জ্বলজ্বল করছিল রশিদের, ‘নিজের দেশে খেলা আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। আমার জন্য বিশ্বকাপ জেতার চেয়েও বড় স্বপ্ন এটি।

আজ (কাল) দেখলেন তো, বাংলাদেশ তাদের ঘরের মাঠে কী ধরনের সমর্থন পেয়েছে। আমিও নিজের দর্শকদের সামনে খেলার অনুভূতিটা উপভোগ করতে চাই। আফগানিস্তানে যদি বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দেশ এসে খেলে যায়, তাহলে স্বপ্ন পূরণ হবে। আশা করি আমি খেলায় থাকতে থাকতেই সেটা হবে। সব শেষে রশিদ খান স্বপ্ন পূরণ করলেন সেই প্রতিবন্ধী ভক্তের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *