Breaking News

মাহমুদউল্লাহর রিপ্লেসমেন্ট বিশ্বকাপে কেমন খেললেন?

বাংলাদেশ ক্রিকেটে বর্তমান সময়ে যে কজন তরুণ ক্রিকেটারকে সম্ভাবনাময়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাদের মধ্যে অন্যতম ইয়াসির রাব্বি। তিন ফরম্যাটেই তিনি এখন পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত।

এক সাক্ষাৎকারে এ ক্রিকেটার বলেছিলেন, বাংলাদেশকে একদিন বিশ্বকাপ জেতানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি। সেই স্বপ্ন জয় না হোক, নিজের পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে ভালো ফলাফল এনে দেওয়ার সুযোগও পেয়ে যান তিনি।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দিয়ে ইয়াসিরকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলভূক্ত করেন নির্বাচকরা। কিন্তু কী প্রতিদান দিয়েছেন এ মিডলঅর্ডার ব্যাটার? সুপার টুয়েলভের ৩ ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছেন ইয়াসির।

সেখানে তার রানসংখ্যা – ৩, ১, ১ , মোট ৫ রান! ভারতে বিপক্ষে ইয়াসির করেছেন ১ রান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩ রান। এর আগের ৬ ইনিংসে তার রানসংখ্যা – ৭, ৬ ১, ০ ও ৩। সবমিলিয়ে ১৯ রান!

ক্রিকেটভক্তদের মনে প্রশ্ন উঠছে এটা কোনো ব্যাটারের পারফরম্যান্স! একজন স্বীকৃত পেসারও শেষ দিকে নামার সুযোগ পেলে এর থেকে বেশি স্কোর করেন। যার প্রমাণ রয়েছে বাংলাদেশ দলেই।

ওই ৬ ইনিংসে দলের অন্যতম পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সর্বমোট সংগ্রহ ২৫ রান। যেখানে কাটার মাস্টারের ব্যাটিং গড় ৬.২৫ সেখানে স্বীকৃত ব্যাটার ইয়াসিরের গড় ৩.৮৩!

ক্রিকেটের এই খুদে ফরম্যাটে ইয়াসির এ পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ১০টি, তার রানসংখ্যা মাত্র ৯৪। ১০ ইনিংসের ৮টিতেই দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। দুটিতে ভালো রান পেয়েছেন। একটি পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪২ রানের ইনিংস।

আরেকটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২১ রানের। এই দুটো ইনিংস বাদে বাকি সব টেলিফোন ইনডেক্সের মতো দেখতে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দিয়ে ইয়াসিরকে টি-টোয়েন্টি দলভূক্ত করে কি লাভ হলো?

ওই জায়গার রিয়াদ কি এর চেয়েও খারাপ খেলতেন? অনেকের মতে, বিশ্বকাপ দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হয়তো ফর্ম ফিরে পেতেন। অতীতেও দেখা গেছে, বড় আসরে দলের দায়িত্ব ঠিকই পালন করেছেন তিনি।

তার উপর রিয়াদ দলের সবচাইতে বেশি অভিজ্ঞ তারকা। বিশ্বমঞ্চে অধিনায়ক সাকিবের নেতৃত্বে সহযোগিতা করতে পারতেন তিনি। সিদ্ধান্ত নিতে অভিজ্ঞতার ঝুলি খুলে সহায়তা করতে পারতেন,

যা অপেক্ষাকৃত কম ম্যাচ খেলা নুরুল হাসান সোহানের চেয়ে ভালোই হতো। তার ওপর অনিয়মিত স্পিনারও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাকে দিয়ে বল করিয়ে জুটি ভাঙার নজির আছে ভুরি ভুরি।

দেশের ক্রিকেটবোদ্ধারা আঙুল তুলেছেন নির্বাচকদের দিকে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, বিশ্ব আসরে অস্ট্রেলিয়ার মতো কন্ডিশনে যদি টপঅর্ডার ব্যর্থ হয় তবে অন্তত একজন দরকার মিডলঅর্ডারে যিনি তার অভিজ্ঞতার আলোকে খেলে দলকে টেনে নিয়ে যাবেন সম্মানজনক স্কোরের দিকে।

এ কথা কি একটুও ভাবায়নি নির্বাচকদের? সে ভাবনার দৈন্যতা দেখা গেছে বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিডল ও লোয়ারঅর্ডারের কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। লিটন দাসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ এক সময় দখলেই ছিল বাংলাদেশের।

পরে ৯ উইকেট হাতে রেখেও ভারতের বিপক্ষে ৮৫ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষেও একই দৃশ্যপট। প্রথম ১০ ওভারে ৭০ রান তোলা দল পরের দশ ওভারে ধরাশায়ী। একের পর এক উইকেট বিলিয়ে দিয়ে মাত্র ১২৭ এ থামে টাইগাররা

এ জায়গায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ থাকলে হয়তো এসব ম্যাচের একটিতেও ভালো ফলাফলের আশা করা যেত। অনেকের প্রশ্ন, সারা বছর খেলিয়ে রিয়াদকে কেন ঠিক বিশ্বকাপের আগে বাদ দিতে হবে? তাকে কেন জিম্বাবুয়ে সফরে রাখা হয়েছিল?

কেন বিশ্বকাপ দলের ক্যাম্পেইনে অনুশীলন করানো হলো যদি ইয়াসির আলিকেই নিতে হয়! অনেকের দাবি, বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অভাব অনুভব করেছে বাংলাদেশ দল।

তিনি থাকলে হয়তো সেই সিরিজে এতোটা বিধ্বস্ত হতে হতো না সাকিব বাহিনীকে। বিশ্লেষকদের মতে, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের শেখার কিছু নেই। আর বিশ্বকাপ মঞ্চও প্রাথমিক দৃষ্টিতে শিখতে যাওয়ার প্ল্যাটফর্ম নয়।

সে বিবেচনায় মাহমুদউল্লাহর মতো জাতীয় দলের দীর্ঘসময়ের ক্রিকেটার ও টি-টোয়েন্টির সাবেক অধিনায়ককে বাদ দিয়ে অনভিজ্ঞ লোয়ারমিডলঅর্ডারের কাউকে নিয়ে বিশ্বকাপে যাওয়া কতটুকু যৌক্তিক?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *