বাংলাদেশের ক্রিকেটের এ কি হাল হকিকত? টাইগাররা কি জিততে ভুলে গেছে? পারফরমেন্সের গ্রাফ তো দিনকে দিন নিচের দিকে নামছে। জয়ের দেখা মিলছে কালেভদ্রে। পরাজয়ই নিত্য সঙ্গী হয়ে গেছে।
তবে কি ক্রিকেটে অবনমন টাইগারদের? টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে ২০ ওভারের ম্যাচে বেশি অংশ নেয়া আর তাতে হারের পাল্লা ভারি বলেই গত এক বছরের বেশি সময় এমন কথাই শোনা গেছে।
তবে আসল সত্য হলো, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে পারফরমেন্স আর ফল যেমনই হোক না কেন, ওয়ানডের বাংলাদেশ কিন্তু আগের মতোই আছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, জয়-পরাজয়ের হিসেব নিকেশে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির তুলনায় ওয়ানডেতে জয়ের
পাল্লা অনেক ভারি বাংলাদেশের এবং তিন ফরম্যাটের মধ্যে একমাত্র ওয়ানডেতেই বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা অনেক বেশি। সেটা শুধুই পরিসংখ্যানের কথা নয়। বাস্তব হলো, বাংলাদেশ
জাতীয় দল ক্রিকেটের একটি মাত্র ফরম্যাটেই ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলে এবং সেটা ওয়ানডেতে। মাঝে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কিছু ক্লোজ ম্যাচ খেলে খুব কাছাকাছি যেতে পারলেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।
এইতো এবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতের বিপক্ষে সমান তালে লড়ে একদম তীরে এসে তরি ডুবিয়েছে টাইগাররা; কিন্তু আজ তারচেয়ে অনেক কঠিন অবস্থা থেকে সেই ভারতকে ওয়ানডে ফরম্যাটে ১ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
জয় থেকে ৫১ রান দুরে থাকা অবস্থায় মেহেদি হাসান মিরাজ আর শেষ ব্যাটার মোস্তাফিজ অবিচ্ছিন্ন থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন। অথচ তার আগে এক পর্যায়ে ৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে সম্ভাব্য জয় হাতছাড়া করতে বসেছিল লিটনের দল।
কিন্তু আট নম্বরে নামা মিরাজ আর ১১ নম্বর মোস্তাফিজ শেষ উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ৫১ রান তুলে দলকে অবিস্মরনীয় জয় উপহার দিয়েছেন। ১৮৭ রান করতে গিয়ে ১৩৬ রানে ৯ উইকেট হারানোর পরও যে জেতা সম্ভব,
সে সত্যই জানান দিলেন আজ মিরাজ ও মোস্তাফিজ। ভক্ত, সমর্থক ও বোদ্ধা বিশেষজ্ঞ- সবাই একমত, এটা ওয়ানডে বলেই জিতেছে বাংলাদেশ। কারণ ওয়ানডে ক্রিকেটটা টাইগারদের স্বত্তার সঙ্গে মিশে গেছে।
তারা এই একটি ফরম্যাট অনেক বেশি উপভোগ এবং স্বচ্ছন্দবোধ করেন। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা। জিততে করণীয় কাজগুলোও তাদের অনেক ভালো জানা।
আজ রোববার মিরাজ আর মোস্তাফিজের শেষ উইকেটের ব্যাটিং দেখে ঠিক তাই মনে হয়েছে। এবং ভারতকে হারানোর পর ঠিক সে কথাই বলেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তার কথা, ওয়ানডেতে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী থাকি। সামর্থ্যের প্রতি আস্থাও থাকে অনেক বেশি। আর টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে ততটাই ‘কনফিউজড’ থাকি।