ডোনাল্ডের প্রশ্ন বিশ্বমানের সাকিবকে কি আর নতুন করে শেখানো যায়। চলতি সিরিজে বল হাতে নিজের পুরোনো রুপটা নতুনভাবে দেখাচ্ছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তার ঘূর্ণিজাদুতে রীতিমতো হাপিত্যেশ করেছে লঙ্কানরা। সে ধারাবাহিকতা চলছে মিরপুরেও। টেস্ট ক্রিকেটের মায়াবী সৌন্দর্য্যের পুরোটাই দেখা যাচ্ছে সাকিবের বোলিংয়ে।
বুধবার দিনের প্রথম ঘণ্টায়ই লঙ্কান অধিনায়ক দিমুথ করুনারাত্নের উইকেটটি ছিল সাকিবের জাদুকরী বোলিংয়ের বড় বিজ্ঞাপন। দিনের দশম ওভারে অফস্ট্যাম্পের বাইরে ফ্ল্যাট ডেলিভারিতে বাউন্ডারি হজম করেন সাকিব।
সে ওভারেই দারুণ ড্রিফটিং এক ডেলিভারিতে ভেঙে দেন করুনারত্নের মিডল স্ট্যাম্প। অথচ আউট হওয়ার আগের বলটিও মাঝ ব্যাটে খেলেছিলেন লঙ্কান অধিনায়ক।
পরের বলটিও প্রায় একই জায়গায় করেন সাকিব। তবে এবার দেন খানিকটা ঝুলিয়ে, যেটিতে ফ্লিক করতে গিয়ে পুরোপুরি পরাস্ত হন করুনারাত্নে। বলটি তার ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে চলে যায় স্ট্যাম্পে।
সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে মাতেন সাকিব। এই ডেলিভারিতে উইকেট পাওয়ায় আলাদাভাবে নজর কেড়েছে সবার। তবে সারাদিন ধরে এমন জাদুকরী অনেক ডেলিভারিই বের হয়েছে সাকিবের হাত থেকে।
মিরপুর টেস্টে এখন পর্যন্ত ২৬ ওভারে নয় মেইডেনসহ ৫৯ রান খরচায় নিয়েছেন তিনটি উইকেট। তার বোলিংয়ে মুগ্ধ টাইগারদের পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডও।
তাই তো দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে সাকিবের প্রশংসা করতে গিয়ে শেন ওয়ার্ন, এবি ডি ভিলিয়ার্সদের মতো কিংবদন্তিদের উদাহরণ টেনে এনেছেন ডোনাল্ড।
তার আশা, ম্যাচের চতুর্থদিন আরও একবার পাঁচ উইকেট তুলে নেবেন সাকিব। ডোনাল্ডের মতে, দলে সাকিবের মতো কেউ থাকা অমূল্য সংযোজন।
নিজে পেস বোলিং কোচ হলেও, সাকিবের মতো স্পিনারের প্রশংসায় ডোনাল্ড বলেছেন, ‘সাকিবের মতো একজনকে আপনি কী শেখাবেন? এটা অনেকটা শেন ওয়ার্নের মতো।
সে এতোটাই অভিজ্ঞ। সারা বিশ্ব ঘুরে খেলে অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে তার। দলের সবাইকে চাঙা রাখে, একই জায়গায় টানা বল করে যায় সে।’ স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে সাকিবের ভালো সম্পর্ক।
যখনই প্রয়োজন হয় হেরাথের সঙ্গে কথা বলে নেন সাকিব। সেগুলোও মন্ত্রমুগ্ধের মতো শোনেন ডোনাল্ড। শুধু তাই নয়, সাকিবের বিষয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা দলের অন্যদের সঙ্গেও শেয়ার করেন এ দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ।
তার ভাষ্য, ‘আমি জানি হেরাথ ও সাকিব কাছের বন্ধু। যখনই প্রয়োজন পড়ে তারা কথা বলে নেয়। সাকিব যখন স্পিন বোলিং নিয়ে কথা বলে, মনে হয় যেন সে নিজের আলাদা জগতেই আছে।
আমি সাকিবের অনেক বড় ভক্ত। এ সময় এবি ডি ভিলিয়ার্সের উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, ‘আজ ডাগআউটে আমি কয়েকজনকে বলছিলাম, যখন এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো একজন বলে যে তাকে (সাকিব) ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলা কঠিন তখন এটি আসলেই কঠিন।
আপনারা জানেন, সাকিব খুবই বুদ্ধিমান বোলার। সে গতির তারতম্যে খুবই চতুরতা দেখায়। যা আজ আরও একবার দেখিয়েছে। সাকিবের কাছ থেকে আরও একটি ফাইফারের আশা জানিয়ে ডোনাল্ডের শেষ কথা।
আশা করি কাল সকালে সাকিব পাঁচ উইকেট তুলে নেবে। এটি দারুণ হবে। তাকে দলে পাওয়া অসামান্য ব্যাপার। তার অভিজ্ঞতা, তার নেতৃত্ব দলের জন্য অমূল্য।