Breaking News

ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

কবি নজরুলের চিরসত্যের মতো কানে বাজা উক্তিটাই যেন মিথ্যা করে দিলেন কৃষ্ণা সরকাররা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে ‘যা কিছু মহান’ তার অর্ধেক নয় প্রায় সবটা অর্জনই নারী দলের।

বয়স ভিত্তিকের মতো এবার জাতীয় দলের মেয়েদের অর্জনের ঝুলি পূর্ণ হলো বড় শিরোপায়। স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নারী সাফে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।

কটাক্ষ-কটুক্তি, অভাব-অপ্রাপ্তি থামামে পারেনি বাংলাদেশের এই নারী ফুটবলারদের। দৃঢ় কণ্ঠে স্বপ্নসারথীদের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করার ঘোষণা দেওয়া সানজিদা খাতুনরা তাদের স্বপ্ন ছুঁতে পেরেছেন।

যারা তাদের ফুটবল মাঠের সবুজ ছোঁয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন, তাদের শিরোপা ছোঁয়ার উল্লাসে ভাসিয়েছেন। সোমবার কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফাইনালে মেয়েদের প্রতিপক্ষ ছিল অনেক কিছু। নেপালকে কখনও হারাতে পারেনি মেয়েরা।

২৫ হাজার স্বাগতিক দর্শকের ছিল তাদের বাড়তি উৎসাহ। বৃষ্টির ফোঁটায় কাঁদার মাঠে সেরাটা দিতে পারার শঙ্কাও ছিল। সব জয় করে ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম উৎসব করে টাইগ্রেসরা। কর্ণার থেকে আসা ক্রস থেকে গোল করেন শামসুন্নাহার।

প্রথমার্ধে আরও একটি গোল করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এবারের গোল আসে কৃষ্ণা রানি সরকারের পা থেকে। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের বল ধরে ম্যাচের ৪১ মিনিটে জোরের ওপর নেওয়া তার শট ফেরানোর কোন সুযোগই পাননি নেপাল দলের গোলরক্ষক।

দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটে এক গোল শোধ করে ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দেয় স্বাগতিক নেপাল। কিন্তু ৭৭ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং দলের তৃতীয় গোলটি করে দলকে শিরোপার কাছে নিয়ে যান কৃষ্ণা।

পরের সময়টা গোলবার অক্ষত রাখার কাজটা করতেও ভুল করেনি কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটনের দল। এ নিয়ে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় সাফে প্রথম সাফল্য পেল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। ২০১৬ সালে ভারতের বিপক্ষে হেরে শিরোপা হারানোর ক্ষত তৈরি হয়।

আসরে ওই ভারতকেও হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেমিফাইনালে ভুটানকে উড়িয়ে দিয়েছে ৮-০ গোলে। নেপালকে হারিয়ে হলো স্বপ্ন পূরণ। এর আগে ২০০৩ সালে সাফের শিরোপা ঘরে তোলে বাংলাদেশ পুরুষ ফুটবল দল। বিবেকানন্দের বিখ্যাত উক্তি, ‘আগামী পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত জন্মভূমিই হোক তোমাদের একমাত্র উপাস্য দেবতা।

’ ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বৈষম্য ভুলে জন্মভূমিই একমাত্র উপাস্য হলে এসব শিরোপার অপেক্ষা হয়তো পঞ্চাশ বছরে ঠেকত না। সানজিদাকে লিখতে হতো না, ‘টিপ্পনী একপাশে রেখে যে মানুষগুলো সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই।

এই সাফল্য হয়তো নতুন সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *