রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্ট যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই দ্বিতীয় টেস্টের শুরুটা করলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আগের টেস্টে শেষদিনে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। আর দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে নাগালের মধ্যেই আটকে রাখলেন এই অফ-স্পিনার।
মিরাজের পাঁচ আর তাসকিন আহমেদের ৩ উইকেটের পর পাকিস্তান থামল ২৭৪ রানে। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনটা ভেসে গিয়েছে বৃষ্টিতে। এরপর দ্বিতীয় দিনের প্রথম ওভারে তাসকিনের বুদ্ধিদীপ্ত সেটাপে ফিরেছেন আবদুল্লাহ শফিক।
গত ১ বছরে নিজের ৪র্থ ডাকে ফিরেছেন সাজঘরে। এরপরের গল্পটা সাইম আইয়ুব আর শান মাসুদের। পুরো সেশনে বাংলাদেশের বোলারদের শাসন করেছেন। উঠেছে ৯৯ রান। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই দলীয় সংগ্রহ এক শ পার করেছিল পাকিস্তান।
কিন্তু বাংলাদেশ ফিরেছে এরপরেই। তৃতীয় ওভারে এসেছে প্রথম সাফল্য। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরে যান ৫৭ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক শান মাসুদ। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি তিনি। সাইম আইয়ুব খেলছিলেন প্রপার টেস্ট ক্রিকেট।
তাকে বড় শট খেলতে একপ্রকার ফাঁদেই ফেলেছিলেন মিরাজ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে স্লগ করতে চেয়েছিলেন। তবে বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলটা ব্যাটে আসেনি। বল উইকেটরক্ষক লিটনের হাতে যেতেই নিখুঁত স্ট্যাম্পিং। সৌদ শাকিল ফিরতে পারেন শূন্য রানেই।
নাহিদ রানার বলে স্লিপে ক্যাচ যায়। তবে তা মিস করেন মিরাজ। ২৮ বলে ১৬ রান করে এগোচ্ছিলেন প্রথম টেস্টে সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার। তবে সেটাকে বাড়তে দেননি তাসকিন। ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় স্ট্যাম্পে। তাসকিনের দিনের দ্বিতীয় শিকার হন এই ব্যাটার।
সাকিব আল হাসান চাপ বাড়িয়েছেন। মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন উইকেট। রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের শেষ বিকেলে চিত্র ছিল। মাঝে মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার নাহিদ রানা। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রিজওয়ানকে নাজমুল হোসেনের ক্যাচ বানিয়ে ফিরিয়েছেন
এই গতি তারকা। লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা দিয়ে স্লিপে ক্যাচ দেন আগের ম্যাচে দারুণ ছন্দে থাকা রিজওয়ান। তার আউটে ষষ্ঠ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ২৪ রানের জুটির পর মিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন খুররাম শেহজাদ।
ক্যাচ দিয়েছেন মিড–অফে দাঁড়িয়ে থাকা সাকিব আল হাসানকে। মিরাজ পেয়ে যান নিজের তৃতীয় উইকেট। এরপরেই সাকিব আল হাসানের বলে ক্যাচ মিস করেন মুমিনুল হক। জীবন পান মোহাম্মদ আলী।তবে সেটার সুবিধা পাকিস্তান নিতে পারেনি।
মোহাম্মদ আলী বেশিক্ষণ টিকলেন না। মিরাজের বলে স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচ হয়েছেন। মিরাজ নিলেন চতুর্থ উইকেট, পাকিস্তান হারায় অষ্টম ব্যাটসম্যান। সালমান আলী আঘা এরপর মারমুখী হয়েছেন। নতুন বলে তাসকিন আক্রমণে আসতেই উড়িয়ে খেলেছেন।
তুলে নেন ফিফটি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই তাসকিনের বলেই ফিরতে হয় তাকে। বাউন্সার বলে খেলতে চেয়েছেন ফাইন লেগে। সাকিব আল হাসান বাউন্ডারি লাইনে নিয়েছেন দারুণ এক ক্যাচ। আর ঠিক পরের বলেই আবরার এগিয়ে এসে খেলতে গিয়েছিলেন মিরাজকে।
ব্যাটে বলে হয়নি। বল লিটনের হাতে জমা পড়তেই ভেঙে দেন স্ট্যাম্প। পূর্ণ হয় মিরাজের পাঁচ উইকেট। পাকিস্তান থামল ২৭৪ রানে।