Breaking News

‘নতুনে’ নান্দনিক বিশ্বকাপের আশায় প্রস্তুত বাংলাদেশ

উপকূলের শহর ব্রিসবেনের আবহাওয়া এখন নাতিশীতোষ্ণ, মেলবোর্নে হাড় কাঁপানো শীত। প্রাকৃতিক এই বৈপরীত্য ছাপিয়ে অস্ট্রেলিয়ার এ দুই শহরকে গতকাল এক সুতোয় বেঁধেছিল টি২০ বিশ্বকাপ। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট রাজধানী মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল অধিনায়কদের অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলন।

যেখানে উপস্থিত সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ দলকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করেন। আর পরামর্শক কোচ শ্রীধরন শ্রীরাম দলীয় মুখপাত্র হয়ে প্রাপ্তি আর সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন ব্রিসবেনে।

দুই শহরের টাইম জোনে পার্থক্য থাকলেও বাংলাদেশ দল নিয়ে সাকিব-শ্রীরামের কথায় অমিল ছিল না একটুও। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো করার সুযোগ দেখছেন দু’জনেই।

নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষ করে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে গতকাল সকাল ১০টায় ব্রিসবেনে পৌঁছায় বাংলাদেশ। মেলবোর্নে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে সাকিব দলের সঙ্গে যোগ দেবেন আজ সকালে।

১৬ অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলনে উৎসবমুখর একটা পরিবেশ এনে দিতে পারলেও বাংলাদেশ অধিনায়ককে প্রশ্ন করার লোকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই সঞ্চালকের করা তিনটি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বাংলাদেশ অধিনায়কের সংবাদ সম্মেলন। যেখানে সাকিব ছিলেন প্রাণবন্ত।

সব্যসাচী এই ক্রিকেটারের মতে, ‘আমি মনে করি, আমাদের দলটা খুব রোমাঞ্চকর। আমাদের অনেক নতুন খেলোয়াড় আছে। এখানে দারুণ অভিজ্ঞতা হবে তাদের। আমিসহ আমাদের সবাই প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আন্তর্জাতিক টি২০ খেলব। এটি নতুন অভিজ্ঞতা।

‘ বাংলাদেশ অধিনায়কের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপের জন্য ভালো একটা প্রস্তুতি নিতে পেরেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘আমার মতে, আমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। ক্রাইস্টচার্চে খুব ভালো দুটি দলের বিপক্ষে চারটি ম্যাচ খেলেছি।

আমরা এখন জানি, অস্ট্রেলিয়ায় ভালো খেলার জন্য কী করতে হবে। আমি মনে করি, ভালো করার জন্য আমরা যথাযথভাবে প্রস্তুত।  জুন-জুলাইয়ের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করে বাংলাদেশ।

টানা তিনটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ ও এশিয়া কাপ খেলে সাকিবরা নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে। যদিও টানা ১৩টি টি২০ ম্যাচ খেলে মাত্র দুটিতে জিতেছে।

পরাজয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া দলের কাছ থেকে বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে বেশি কিছু আশা করার মতো সাহসী লোকের অভাব থাকলেও সাকিব-শ্রীরাম সাহসী জুটি।

অধিনায়কের মতো কোচও কেবল ইতিবাচক দিকগুলো দেখতে পাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এসেছে। আমরা যেভাবে ব্যাটিং করেছি, বাকি দুই দলও কিন্তু সমান রানই করেছে। এমনকি আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে বেশি রান করেছি, যেটা নিউজিল্যান্ড ফাইনালে করতে পারেনি।

এখান থেকে আমরা অনেক আত্মবিশ্বাস নেব।’ ত্রিদেশীয় সিরিজকে টিম কম্বিনেশন ও প্রসেসের মঞ্চ হিসেবে নিয়েছিলেন কোচ। টুর্নামেন্টে চারটি ম্যাচ হেরে গেলেও সেরা কম্বিনেশন পাওয়া গেছে বলে দাবি কোচের, ‘আমাদের ধারণা পরিস্কার।

আমরা জানি, আমাদের সেরা দলটা কেমন। সেরা দল মানে একটা দল নয়, প্রতিপক্ষ দেখে সেরা দলেও পরিবর্তন আসে। কিন্তু মানসিকভাবে খুব পরিস্কার ধারণা নিয়ে এখানে এসেছি।

ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে মূল দল থেকে সাব্বির রহমান ও সাইফউদ্দিনকে বাদ দিয়ে সৌম্য সরকার ও শরিফুল ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করে। সেদিক থেকে দেখলে শ্রীরামের কথা যৌক্তিক। সেরা কম্বিনেশন নিয়েই বিশ্বকাপ ভেন্যুতে এসেছেন তাঁরা।

বাংলাদেশ দলের কোচিং স্টাফের তিনজনই অস্ট্রেলিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। জেমি সিডন্স ও শেন ম্যাকডামট অস্ট্রেলিয়ারই নাগরিক। পরামর্শক কোচ শ্রীরামও সাত বছর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করে গেছেন।

জীবন থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতা দিয়ে ক্রিকেটারদের অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভালো করার ব্যাটিং-বোলিংয়ের মন্ত্রপাঠ শেখাচ্ছেন তিনি।

তবে যে দলটি এখন পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় কোনো টি২০ ম্যাচ খেলেনি, বিশাল মাঠে কতটা ভালো করতে পারবে- সে প্রশ্ন বড় হয়ে ধরা দেয়। সোমবার প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম টি২০ ম্যাচ খেলবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *