ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিং করছে বাংলাদেশ দল। ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে উড়ন্ত সূচনা।
দারুণ শুরু পেলেও মেয়ার্সকে থিতু হতে দেননি শেখ মেহেদী। নিজের পঞ্চম বলে তিনি বোল্ড করেন ১৭ রান করা মেয়ার্সকে। নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন সাকিব আল হাসানও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ- ১৯৩/৫ (২০ ওভার) (কিং ৫৭, পুরান ৩৪, পাওয়েল ৬১*; শরিফুল ২/৪০ সাকিব ১/৩৮, মেহেদী ১/৩১)
উইন্ডিজ সফরে গিয়ে বাংলাদেশ দল যেন জিততেই ভুলে গেছে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে যেমন হেরেছ টাইগাররা, তেমনি ওই দুই ম্যাচে পরাজয় হয় টসে। এরপর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম যে ম্যাচটি পণ্ড হলো বৃষ্টিতে, সে ম্যাচেও টস হারে সফরকারীরা। আজ রোববার কুড়ি ওভারের ফরম্যাটের দ্বিতীয় ম্যাচেও পরাজয় টসে।
স্বাভাবিকভাবে টস হারা বাংলাদেশ দল নিজেদের পছন্দের সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি আজ। টস হেরে বল হাতে নামতে হয় অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলকে। যদিও টাইগারদের একাদশে ছিল দুটি পরিবর্তন, তবে বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
দীর্ঘদিন পর তাসকিন আহমেদের ফেরার ম্যাচে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছে উইন্ডিজ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ক্যারিবীয়রা নিজেদের স্কোর বোর্ডে ১৯৩ রান জমা করে।
ডোমিনিকায় আজ আর বৃষ্টি বাগড়া ছিল না। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের শুরুটা হবশ্য ভালো হতে দেয়নি বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ প্রথম ৫ ওভারে ভিন্ন ৫ জন বোলারকে ব্যবহার করেন।
তাতে সফলই বলতে হবে টাইগার দলপতিকে। এই ৫ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে প্রতিপক্ষে ২ উইকেট তুলে নিতে সক্ষম হয় বোলাররা। যার প্রথন সাফল্য আসে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই।
অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান নিজের প্রথম বলে কাইল মায়ার্সের কাছে চার হজম করেন। পরের তিন বল কোনো রান নিতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান। পঞ্চম বলেই বোল্ড হন মায়ার্স।
তিনি ৯ বলে ১৭ রান করেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আসে দ্বিতীয় সাফল্য। সাকিব আল হাসানের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন শামরাহ ব্রুকস। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ। শূন্য রানে ফেরেন ব্রুকস।
২৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ওপেনার ব্র্যান্ডন কিংকে সঙ্গী করে অধিনায়ক নিকোলাস পুরাণ দলের হাল ধরেন। ব্যাট হাতে রীতিমতো ঝড় তুলে টাইগার বোলারদের শাসন করে দুইজন।
দলীয় সংগ্রহ বাড়িয়ে দুইজনই ছুটছিলেন অর্ধশতকের দিকে। তবে ষষ্ঠ বোলার হিসেবে হাত ঘোরাতে এসে দলকে ব্রেক-থ্রু এনেন দেন একাদশে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন। ইনিংসের ১৩তম ওভারে কোনো রান না দিয়েই পুরাণকে ফেরান তিনি।
এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন উইন্ডিজ অধিনায়ককে।
রিভিউ নিয়েছিলেন পুরাণ, কাজে আসেনি। ৩০ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ব্যক্তিগত ফিফটির কোটা পূর্ণ করেন কিং। ৩৬ বলে আসে টি-টোয়েন্টিতে তার এই তৃতীয় অর্ধশতক। পরে কিংকে একপাশে দর্শক বানিয়ে রেখে ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন রভম্যান পাওয়েল।
ইনিংসের ১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানকে তিনবার ওভার বাউন্ডারিতে উড়িয়ে নেন ২৩ রান। পরের ওভারে তাসকিনের ওপর চড়াও হন এই ব্যাটিং দানব। সে ওভার থেকে আদায় করেন ২০ রান। বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ধ্বংসলীলা চালিয়ে মাত্র ২০ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন পাওয়েল।
যেখানে ২টি চারের সঙ্গে ছক্কা হাঁকান ৫টি। পাওয়েল অর্ধশতক করার আগের বলটিতেই অবশ্য আউট হন কিং। শরিফুল ইসলামকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের হাতে ক্যাচ দেন ৪৩ বলে ৫৭ রানে।
পরে রোমারিও শেইফার্ড ৪ বলে ২ রান করে আউট হলে পাওয়েলের ২৮ বলে ৬১ এবং স্মিথের ৪ বলে ১১ রানের অপরাজিত ইনিংসের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোর বোর্ডে ১৯৩ রানের পুঁজি পেয়েছে উইন্ডিজ।
বাংলাদেশের সামনে ১৯৪ রানের পাহাড় টপকানোর চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের হয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ২টি আর মোসাদ্দেক, মেহেদী এবং সাকিব ১টি করে উইকেট নেন। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন চোট কাটিয়ে একাদশে ফেরা তাসকিন। ৩ ওভারে ৪৬ রান খরচ করেন এই পেসার।