Breaking News

তিন সপ্তাহ না পেরোতেই ফের টেস্ট ব্যাটিংয়ে ০,০,০,০,০,০ মুখ দেখলো বাংলাদেশ !

এর আগে  লঙ্কানদের বিপক্ষে সর্বশেষ ৬ শূন্যর মুখ দেখে ছিলো বাংলাদেশ তিন সপ্তাহ না পেরোতেই টেস্ট ব্যাটিংয়ে ফের ০,০,০,০,০,০ মুখ দেখলো টাইগারেরা। রোচ তার নামের পাশে জড়ো হয়েছে মোটে দুইটি উইকেট।

অ্যান্টিগায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে কেমার রোচের চেয়ে সফল আরও দুই ক্যারিবীয় পেসার- জেডেন সিলস (৩/৩৩) ও আলজারি জোসেফ (৩/৩৩)।

তবু রোচের ৮ ওভারের স্পেল নিয়েই যতো কথা। কারণ দিনের শুরুতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডটা ভেঙে দেওয়ার কাজটি রোচই করেছেন।

এ ক্যারিবীয় পেসার নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে মাহমুদুল হাসান জয়কে কট বিহাইন্ড ও দ্বিতীয় ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেট উপড়ে সেই যে কাঁপন ধরান- সেটি আর সামলে ওঠা হয়নি।

ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে ১৩ বছর আগে নিজের টেস্ট অভিষেকে এর চেয়েও ভয়ঙ্কর ছিলেন রোচ। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের আগে বোর্ডের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ক্যারিবীয়দের শীর্ষ তারকারা কেউ খেলেননি।

একঝাঁক নতুন ক্রিকেটারে সাজানো দল নিয়ে বাংলাদেশের মুখোমুখি হয় স্বাগতিকরা। এখন যার গতি ও সুইংয়ের সামনে তামিম,জয়, শান্ত, মুুমিনুলরা কম্পমান, সেই রোচের অভিষেক সিরিজ ছিল সেটি।

সেই দুই টেস্টে প্রচন্ড গতি ও বারুদে বোলিং করে টাইগারদের কাছ থেকে সর্বাধিক সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন কেমার রোচ। সিরিজের দুই টেস্টে ১৩ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।

সেন্ট জর্জে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৮ রানে ৬ উইকেটের পতন ঘটিয়ে টাইগার শিবিরে রীতিমত আতঙ্ক ছড়ান বার্বাডোসের সুঠাম দেহের দ্রুতগতির এ বোলার। তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি।

রোচের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের ম্যাচে হারেনি বাংলাদেশ। আজকের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সের সামনে ম্লান হয়ে যায় রোচের সে বিধ্বংসী বোলিং।

চোটে পড়ে মাঠ ছাড়া মাশরাফির বদলে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হয়ে ব্যাট-বলে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ম্যাচ জেতানো নৈপুণ্য উপহার দিয়ে ৩ উইকেটের জয় এনে দেন সাকিব।

বল হাতে ১২৯ রানে ৮ উইকেট (৩/৫৯ ও ৫/৭০) শিকারের পর ব্যাট হাতে ১৫৮ রান (৭০ ও ৯৬*) করে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব।

এর আগে কিংসটনে প্রথম টেস্টে ৬৯ রানে পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশকে সুবিধাজনক অবস্থায় পৌঁছে দেন তামিম ইকবাল। তার সেঞ্চুরির (১২৮) সঙ্গে বোলারদের নৈপুণ্যে আসে ৯৫ রানের জয়।

সে ম্যাচেও রোচ ঠিক সমান তিনটি করে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। সমীহ জাগালেও কিন্তু টাইগারদের দমাতে পারেননি ঐ ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার। কিন্তু ১৩ বছর পর এখন কী হচ্ছে? কেমার রোচ যেন মূর্তিমান আতঙ্ক হয়ে গেছেন।

তাকে খেলতে গিয়ে সবাই তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। রোচের সঙ্গে সিলস-জোসেফরাও এগিয়ে এসেছেন। কেউ কেউ হয়তো বলবেন, রোচ শুধু ২ উইকেট নিয়েছেন, তাকে কেন এত বড় করা হচ্ছে?

কারণ শুরুতে রোচের বলে মাহমুদুল জয় ও নাজমুল শান্ত আউট হলে বাংলাদেশ যে খাদের কিনারায় পড়ে যায়, সেখান থেকে আর উঠে আসা সম্ভব হয়নি।

সবাই সামনে আগায়। শুধু আগায় না বাংলাদেশ। টেস্টে টাইগারদের উন্নতি কিন্তু একদমই নেই। এগিয়ে যাওয়ার পথটা যেনো কোথায় হারিয়ে ফেলেছেন তামিম, জয়, শান্ত, মুমিনুল, সাকিব, লিটন, সোহান, মিরাজরা। তার বদলে দিনকে দিন যেন টেস্টে পিছিয়ে পড়ছেন তারা।

ঘরের মাঠে স্লো, লো ও টার্নিং পিচে হাতে গোনা কয়েকটি বিচ্ছিন্ন জয় ছাড়া টেস্টে একদমই উন্নতি নেই টাইগারদের। যত দিন যাচ্ছে ততই পেছাচ্ছে বাংলাদেশ। একটু বাড়তি গতি, বাউন্স ও মুভমেন্ট থাকলেই গলদঘর্ম অবস্থা হয় বাংলাদেশের ব্যাটারদের।

প্রশ্ন হলো, এভাবে আর কতকাল? এভাবে খাদের কিনারায় পড়ে থাকা কতকাল? সামনে এগিয়ে আসতে হবে। না হয় টেস্ট খেলার ভবিষ্যতই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

আইসিসি নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করবে, না হয় দ্বিতীয় সারিতে নামিয়ে দিতে বাধ্য হবে। সে চিন্তা করার কিন্তু এখনই সময়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *