Breaking News

কোচ আসে কোচ যায়, শুধু ভাগ্য পরিবর্তন হয়না বাংলাদেশ ক্রিকেটের

যুগে যুগে নতুন কোচের আগমন সংবাদ রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে দেশের ক্রিকেটে—নবাগতের অধীনে নবযুগের সূচনার বার্তা দেওয়া হয়েছে ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে। কিন্তু সেই নবযুগ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি, যত সময় গড়িয়েছে ততই উঁচু জাতের কোচের অসারতার প্রমাণ খুঁজে বের করেছেন নিয়োগকর্তারাই।

প্রচলিত এই ধারার সর্বশেষ ‘সাক্ষ্য’ রাসেল ডমিঙ্গো। তাঁকে উগরে ফেলা যাচ্ছে না কৌশলগত কারণে। তাই উপেক্ষার পথ ধরেছে বিসিবি। অপমানবোধ থেকে যদি এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ নিজে থেকে চলে যেতে চান তাঁকে একবার সৌজন্যমূলক অনুরোধও করা হবে বলে মনে হয় না।

আজ টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পদমর্যাদায় বাংলাদেশে আসছেন শ্রীধরন শ্রীরাম। এই নিযুক্তির ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের ব্যাখ্যায় পরিষ্কার যে বেশ কিছুদিন জাতীয় দলে ওএসডি হয়ে থাকা ডমিঙ্গোর শাস্তিমূলক বদলি হলো শুধু টেস্ট আর ওয়ানডে দলের ড্রেসিংরুমে।

ওয়ানডে দলের ভেতরের খবর, এই ফরম্যাটে তামিম ইকবালদের সাফল্য কিংবা ব্যর্থতায় প্রধান কোচের অবদান কিংবা দায় যৎসামান্য। টেস্ট দলে ডমিঙ্গোর অবস্থান আরো শোচনীয়। টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসানের হাতে সর্বময় ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে বিসিবি।

টেস্টের নীতি নির্ধারণ অধিনায়কের এখতিয়ার। সব মিলিয়ে, টি-টোয়েন্টি গেছে ডমিঙ্গোর। বাকি দুই ফরম্যাটে তিনি থেকেও নেই। টি-টোয়েন্টি থেকে ডমিঙ্গোকে খারিজ করে দিয়ে গতকাল বিসিবি পরিচালক ও বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, প্রত্যেকটা মানুষেরই আলাদা আলাদা চিন্তা-ভাবনা থাকে।

আমার ফিলোসফি আলাদা এবং আপনার ফিলোসফি দুটি আলাদা। ঠিক তেমনি কোচের ফিলোসফিও আলাদা। সত্যি বলতে, ওর (ডমিঙ্গো) ফিলোসফি যেটা, সেটা হয়তো বা আমাদের সঙ্গে ম্যাচ করছে না। এটা তো আসলে কথা বলে হবে না।

বোঝাই যাচ্ছে যে আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে পারছি না। তাই দেশের জন্য, ক্রিকেটের জন্য, যদি ভিন্ন দর্শনের কেউ আসে, তাহলে অসুবিধা কী? এসব চিন্তা-ভাবনা দেখা যাক কী হয়। তার মানে কিছুই যখন হচ্ছে না ডমিঙ্গোকে দিয়ে তখন নতুন কাউকে এনে পর্যবেক্ষণের পুরনো নীতিতেই হাঁটতে যাচ্ছে বিসিবি।

টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট বিবেচনায় সেই নতুনজনের অভিজ্ঞতা যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কাজ করেছেন, অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলেরও সহকারী কোচ জিতেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

মাহমুদের কাছে এই নিযুক্তির ব্যাপারে দ্বিতীয় আরেকটি ইতিবাচক দিকও আছে যেহেতু টি-টোয়েন্টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করে থাকে বা টি-টোয়েন্টিতে ওর শ্রীরাম বেশি ইনভলভমেন্ট তাই ও এই বিষয়গুলো বুঝতে পারবে। তা ছাড়া ভারতের সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতিগত মিলও রয়েছে।

এতে করে কথাবার্তা বা যোগাযোগ আদান-প্রদানে সুবিধা হবে। সব মিলিয়ে সে আসার পর আশা করছি আমরা একটা পরিবর্তন পাব। একটি পণ্যের প্রচারণামূলক অনুষ্ঠানে টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আশায় বুক বেঁধেছেন যে শ্রীরাম যেহেতু অস্ট্রেলিয়ায় কাজ করেছেন।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাঁর কাছ থেকে মহামূল্য পরামর্শ পাওয়া যাবে। একই আবহ ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। ২-১ ব্যবধানে বাংলাদেশ দল ওয়ানডে সিরিজ জিততেই রাসেল ডমিঙ্গো ও অ্যালান ডোনাল্ডের ভূয়সী প্রশংসা হয়েছিল সর্বমহলে।

দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনের রহস্যভেদ ড্রেসিংরুমে এঁরাই করেছিলেন বলে বিস্তর প্রচারণা হয়েছে সে সময়। কিন্তু সফরের শেষ প্রান্তে এই দুজনের মুণ্ডপাত হয়েছে মমিনুল হকরা পর্যুদস্ত হওয়ার পর। শ্রীরামের ভাগ্যে তাই খুব ভালো কিছু দেখা যাচ্ছে না। চলমান সংস্কৃতিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভাগ্যবদলের সম্ভাবনাও ক্ষীণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *