দুপুরের সঙ্গে রাতের বড্ড অমিল। রোদ-মেঘের লুকোচুরিতে অ্যাডিলেড ওভালে এসেছিলেন বাংলাদেশের দর্শকরা। মাঠের বাইরে উঠেছিল বাঘের গর্জন। সংখ্যায় কম হলেও ভারতের দর্শকদের বেশ জবাবটাই দিচ্ছিলেন টাইগার ভক্তরা।
কিন্তু জয় ধরা না দিলে যেমনটা হয়, ম্যাচ শেষে আড়ালেই থাকলেন সেই দর্শকরা। আনন্দ-উল্লাস থাকল ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তদের। তবে তারা ঠিকই বাংলাদেশের প্রশংসায় মাতলেন। কারণ এমন একটা ম্যাচ যেখানে জিততে পারতো দুই দলের যে কেউ।
একটা সময় লিটন দাসের ইনিংসে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা জেগেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষটাতে এসে সর্বনাশ। বৃথা গেল লিটনের ২৭ বলে ৬০ রানের ইনিংসটি।
তবে ঠিক প্রশংসার বৃষ্টিতে ভিজলেন বাংলাদেশের এই ওপেনার। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম হাফসেঞ্চুরিটি এখন তার। ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি করা লিটন জিতলেন সাকিবের মনও।
বুধবার ভারতের কাছে ৫ রানে হারের পর অ্যাডিলেড ওভালের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে সাকিব আল হাসান বলছিলেন, ‘গত ২-৩ বছর ধরে ও খুব ভাল খেলছে। টি-টোয়েন্টি হয়তো এই বছরটা খুব ভাল খেলছে।
আপনি যদি ওর ওয়ানডে বা টেস্ট দেখেন, শেষ দুই বছর খুবই ভালো খেলছে। ওই আত্মবিশ্বাসটাই আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও এসেছে। লিটন জানে কিভাবে রান করতে হয়।
সাকিব মনে করেন, এটাই লিটনের যোগ্যতা। তিনি এমনই মানের ক্রিকেটার, ‘আজকে ওর জন্য বড় একটা সুযোগ ছিল। আমরা ওকে যে মানের খেলোয়াড় মনে করি সেই অনুযায়ী খেলেছে ও। এমন না যে আউট অব দ্য বক্স।
আমরা সবাই জানি ও এমন ইনিংস খেলার জন্য ক্যাপাবল। ম্যাচে লিটন ভাল করলেও অন্য দুই তরুণ হাসান মাহমুদ আর শরিফুল ইসলাম হতাশ করেছেন। বল হাতে হাসান ৪ ওভারে দিয়েছেন ৪৭।
শরিফুল সমান ওভারে আরও খরুচে ৫৭ রান। তারা রান একটু আটকাতে পারলে লক্ষ্যটাও কম হতো বাংলাদেশের। হয়তো জয়ের একটা সম্ভাবনাও থাকতো। এমন প্রসঙ্গ উঠতে সতীর্থদের পাশে থাকলেন সাকিব, ‘দেখুন, খেলতে খেলতে সবই শিখবে।
প্রতি ম্যাচেই কেউ না কেউ ভালো বোলিং করবে। আবার কেউ না কেউ খারাপ বোলিং করবে। আমি নিদিষ্ট করে কাউকে নিয়ে কখনো মন্তব্য করতে পছন্দ করি না। দল হিসেবে আমার কাছে মনে হয় আমরা একটা ভাল ম্যাচ খেলেছি।
হ্যাঁ বোলিংয়ে আরো বেশ কিছু জায়গায় উন্নতি করতে পারতাম। শুধু উন্নতি না, কিছু জায়গায় আরেকটু ভালো করতে পারতাম। হয়তো পরিস্থিতির কারণে কিংবা অভিজ্ঞতার কারণে ওটা হয়নি।
এখান থেকেই ওদের অনেক বেশি শেখার আছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এই শেখার শেষটাই হচ্ছে না। এভাবেই বারবার পথ হারিয়ে ফেলছে দল। কখনো বোলার কিংবা কখনো ব্যাটসম্যানদের ভুলে শুধু আক্ষেপই সঙ্গী হচ্ছে!