এক ম্যাচ জিতিয়েই কিংবদন্তিদের কাতারে নাম লেখালেন আবদুল্লাহ শফিক।পাকিস্তান ওপেনারদের উর্বরভূমি কোনো কালেই ছিল না। একজন পারফেক্ট টেস্ট ওপেনারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দেশটির ক্রিকেট কর্তাদের হাহাকার করতে দেখা গেছে।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মাঝেমধ্যে কেউ কেউ ঝলক দেখালেও টেস্টে ধারাবাহিকতা দেখানো ওপেনার বিরল। কিন্তু আবদুল্লাহ শফিক এখানে ব্যতিক্রম।
মাত্র ৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে আবদুল্লাহ শফিকের ওপেনারের গড় ৮০! এই ধারাবাহিকতা দিয়ে ছোট ক্যারিয়ারেই আলোচনায় চলে এসেছেন ২২ বছরের এ তরুণ। পুরোনো ঘরানার এই ওপেনার আলোচনায় মূলত কিছু বিরল রেকর্ডের জন্য।
তেমনি একটি রেকর্ড হলো, গর্ডন গ্রিনিজের পর আবদুল্লাহ শফিক হলেন ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় ওপেনার, যিনি কিনা ৩০০-এর বেশি রান তাড়ায় অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে সাজঘরে ফিরেছেন। আরও একটি রেকর্ডে কিংবদন্তিদের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে শফিকের নাম।
ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ৬ টেস্ট শেষে রান সংগ্রহে শফিকের অবস্থান তিন কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার, ডন ব্রাডম্যান ও জর্জ হ্যাডলির পরই। অনেকেই হয়তো বলতে পারেন, সবে তো ক্যারিয়ার শুরু, ছ’টা মাত্র টেস্ট খেলেছে।
এখনই নানা পরিসংখ্যান সামনে এনে মাতামাতি করা উচিত নয়। কয়েক বছর যাক, তাহলে বোঝা যাবে তাঁর প্রকৃত অবস্থা। তবে সকালের সূর্য যেমন দিনের পূর্বাভাস দেয়, ঠিক তেমনি শফিক যে লম্বা রেসের ঘোড়া, সে ইঙ্গিত তিনি এখনই দিয়েছেন।
মাত্র ৬ টেস্টের ক্যারিয়ারেই শফিককে আলাদা করে দিয়েছে মূলত চতুর্থ ইনিংসের পারফরম্যান্স। চতুর্থ ইনিংসে সফল রান তাড়ায় শফিকের ৫২৪ মিনিটের ইনিংসটি হলো সময়ের হিসাবে টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ।
পাকিস্তানের সাবেক তিন ওপেনার রমিজ রাজা, সালমান বাট ও আহমেদ শেহজাদ তাঁদের পুরো ক্যারিয়ারে চতুর্থ ইনিংসে যা রান করেছেন তার চেয়ে ৬ টেস্টেই বেশি রান করেছেন আবদুল্লাহ শফিক।
এখানেই শেষ নয় তার ৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে চতুর্থ ইনিংসে বল খেলেছেন ৯২২টি, যা ভারতীয় ওপেনার বিরেন্দর শেবাগের ৮৭ টেস্টের ক্যারিয়ারের চতুর্থ ইনিংসে মোকাবিলা করা বলের সমান।
আর গাভাস্কার তাঁর প্রথম ৫০ টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে মোট বল খেলেছিলেন ৯২২টি। এই পরিসংখ্যান অনেকের কাছেই অর্থপূর্ণ নাও মনে হতে পারে। তবে একজন ওপেনারের টেম্পারমেন্ট বোঝানোর জন্য এটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
একে তো রানের চাপ, তার ওপর উইকেট থাকে ভাঙা। দক্ষতার সঙ্গে প্রয়োজন হয় প্রচণ্ড মানসিক জোরের। এই যেমন ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটার জো রুট তাঁর ১১৫ টেস্টের ক্যারিয়ারে চতুর্থ ইনিংসে একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছেন গত জুনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠ লর্ডসে।
আর ষষ্ঠ টেস্টেই বিদেশবিভুঁইয়ে গলে স্পিন-স্বর্গে ৪০৮ বলে ১৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন শফিক। জিতিয়েছেন নিজের দলকে রেকর্ড করে।