তখন কাভারে ফিল্ডিং করছিলেন সাকিব আল হাসান। অতদূর থেকে অন্তত তাঁর বোঝার উপায় ছিল না যে বল কুশল মেন্ডিসের ব্যাট বা গ্লাভস ছুঁয়ে গেছে কিনা। বোঝার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গায় ছিলেন যিনি,
সেই মুশফিকুর রহিমও ইশারায় জানিয়ে দিলেন যে তিনি কিছুই শোনেননি। তাই রিভিউও আর নেয়নি বাংলাদেশ। একটু পরেই টিভি রিপ্লে জানিয়ে দেয় যে তা না নেওয়ার ভুলেই লঙ্কান ব্যাটারকে আরো এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দেওয়া হয়েছে।
আল্ট্রাএজে ধরা পড়ে বল তখন ৩১ রানে থাকা মেন্ডিসের গ্লাভসে ঘষা দিয়ে গেছে। যিনি এর আগেও দুইবার জীবন পেয়েছেন, পরেও আরেকবার। সবমিলিয়ে চারবার। মেন্ডিসকে প্রতিবার দেওয়া জীবনেই বাংলাদেশের কোনো না কোনো একটি ব্যর্থতা লুকিয়ে আছে।
তাসকিন আহমেদের বলে মুশফিকুর রহিম যখন উইকেটের পেছনে ক্যাচ ফেলেন, তখন ওই লঙ্কান দাঁড়িয়ে মাত্র ২ রানে। ২৯ রানে থাকা মেন্ডিসের ক্যাচ অবশ্য ঠিকঠাকই ধরেছিলেন মুশফিক।
কিন্তু সেবার বিপত্তি বাঁধে ওভারস্টেপিংয়ের জন্য অফস্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের বল নো হওয়ায়। ৪৪ রানের সময় মেন্ডিসকে রানআউটের সহজতম সুযোগ হাতছাড়া করেন দারুণ ফিল্ডারের সুনাম পেয়ে আসা সাব্বির রহমানও।
এশিয়া কাপ থেকে বিদায়ের পর হারের বিষাদ লুকিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সাকিবের বক্তব্য শুনে মনে হওয়া স্বাভাবিক যে এর মধ্যে অপরাধের পর্যায়ে পড়ে শুধু মেহেদীর নো বল করাই। নষ্ট করা অন্য তিনটি সুযোগের প্রতিটিকে ‘পার্ট অব দ্য গেইম’
বলে দিব্যি চালিয়ে দেওয়া গেলেও যায় না স্পিনারের নো বলকে। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কও তাই ব্যক্ত করলেন কড়া প্রতিক্রিয়া। একাধিকবার এটিকে অপরাধের সমতূল্যও বললেন, ‘কোনো অধিনায়কই চায় না, নো বল হোক।
স্পিনাররা নো বল করলে তো সেটি ক্রাইম। ’ তুলনায় রিভিউ না নেওয়ার ব্যাপারটি তাঁর কাছে খুব বড় কিছু নয়, ‘কেউই শোনেনি আসলে। (আমি) কাভারে ছিলাম, শুনতেই পাইনি। কেউই বলেনি যে ভাই রিভিউটা নেন। বোলার থেকে শুরু করে কেউই না।
বোলাররা এই ম্যাচে চারটি নো বল করেই বরং অধিনায়কের বিরক্তির কারণ হয়েছেন বেশি। এর মধ্যে পেসার এবাদত হোসেন করেছেন দুটো। অন্য দুটো করেছেন শেখ মেহেদী। তাঁকেই অধিনায়কের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে বেশি।
মেহেদীর নো বলে কুশলের বেঁচে যাওয়াই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কিনা, এমন প্রশ্নও উঠলো। এই সুযোগে সাকিব অপরাধের বিষয়টি উল্লেখ করলেন আবার, ‘টার্নিং পয়েন্ট তো হতেই পারে। ব্যাটার যখন আউট হয়ে গেছে।
স্পিনারের নো বল করা অবশ্যই ক্রাইম। ’ কিন্তু বাংলাদেশের স্পিনারদের এরকম ‘ক্রাইম’ করতে সচরাচর দেখা যায় না। তাহলে শেখ মেহেদী কী কারণে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এই ‘ক্রাইম’ করে বসলেন? জবাবটা জানেন সাকিব।
তাঁর মতে, চাপে ভেঙে পড়াই এর কারণ, ‘আমাদের স্পিনাররা এরকম করে না সাধারণত। বোঝা গেল চাপে আমরা এখনো কতটা ভেঙে পড়তে পারি।
এখানে উন্নতি করতে হবে আমাদের। স্কিলের দিক দিয়ে তো উন্নতি করার আছেই। তবে চাপ আসলেই আমরা ভেঙে পড়ি, চাপের মুহূর্ত এলেই হেরে যাই। এসব ম্যাচের ৫০ শতাংশ জিতলেও কিন্তু আমাদের রেকর্ড অনেক ভালো থাকতো।