Breaking News

সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্টেও আশা-ভরসা দলের সিনিয়র ক্রিকেটর ‘সাকিব-তামিম’

সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্টেও আশা-ভরসার কেন্দ্রে সাকিব-তামিম। প্রথম টেস্টে হারের পর সাকিব আল হাসানের দল কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? ব্যাটাররা কি ভুল থেকে শিক্ষা নেবেন? পারফরম্যান্সের গ্রাফটা কি ওপরে উঠবে? টাইগার ভক্ত-সমর্থকরা কিন্তু অনেক আশায় বুক বেঁধে আছেন।

যারা গত ম্যাচে ভালো করতে পারেননি, তারা এবারও ব্যর্থ হবেন, সেটা কি বলে দেওয়া যায়? ক্রিকেট বরাবরই অনিশ্চয়তায় ঠাসা। যখন তখন ঘটে যায় যে কোনো ঘটনা।

এবারও ঘটবে না, তাইবা কী করে বলা! তবে একটি পূর্বাভাস দেওয়াই যায়। তাহলো, টিম বাংলাদেশ কেমন করবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে তামিম আর সাকিবের ওপর।

কেন? লিটন দাস তো ফর্মের তুঙ্গে আছেন! যে কোনো ফরম্যাটে মাঠে নামলেই রানের ফুলঝুরি ছোটাচ্ছেন এ পরিপাটি ব্যাটিং শৈলির স্টাইলিশ উইলোবাজ। তাহলে তার কথা বলা হলো না কেন?

আর মুমিনুলই বা কী দোষ করলেন? এখন না হয় খারাপ সময় যাচ্ছে, কিন্তু এটা তো ঠিক, টেস্টে এ ছোটখাট গড়নের ব্যাটারই টাইগারদের এক নম্বর। তার ওপরইবা নির্ভর করা না কেন? নিশ্চয়ই এমন প্রশ্ন উঠছে।

তা উঠতেই পারে। তবে পরিসংখ্যান পরিষ্কার সাক্ষী দিচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আর বিশেষ করে ক্যারিবীয়দের মাটিতে বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় দলের ব্যাটারদের মধ্যে তামিম আর সাকিবই সেরা। এ দুজনের রেকর্ডই সবচেয়ে ভালো।

তামিম ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ১৩ টেস্ট খেলে করেছেন ৯০৪ রান। সেঞ্চুরি একটি (২০০৯ সালের ৯ জুলাই কিংসটাউনে গড়া ইনিংসটি ১২৮ রানের)। হাফসেঞ্চুরি ৬টি।

গড় ৩৪.৭৬। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এই সেন্ট লুসিয়ায় সর্বশেষ ম্যাচেও তামিম উভয় ইনিংসে (৪৮ এবং ৬৪) ভালো খেলেছেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেও বেশ ভালো পরিসংখ্যান তামিমের। ৭ টেস্টে দেশসেরা ওপেনারের সংগ্রহ ১৪ ইনিংসে ৪৭৮ রান। গড় ৩৪.১৪। সর্বোচ্চ ১২৮। সেঞ্চুরি একটি। ফিফটি ২টি।

সাকিব ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২ টেস্টে করেছেন ৯২৭ রান। সর্বোচ্চ ৯৬ অপরাজিত। সেঞ্চুরি না থাকলেও ‘চ্যাম্পিয়ন’ সাকিব ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন ৬টি।

গড় ৪৬.৩৫। তার ক্যারিয়ারের গড়ের (৩৯.৫০) চেয়ে বেশ বেশি। তার মানে এই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বরাবরই ভালো খেলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেও সাকিবের রেকর্ড বেশ ভালো। ৫ টেস্টে ১০ ইনিংসে রান ৩৭১। সর্বোচ্চ ৯৬ অপরাজিত। হাফসেঞ্চুরি ৪টি। গড় ৪১.২২।

দল হারলেও অ্যান্টিগায় এবার প্রথম টেস্টেও সাকিব উভয় ইনিংসে (৫১ ও ৬৩) ফিফটি উপহার দিয়েছেন। বোলার সাকিবও কম যান না।

ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে বাঁহাতি স্পিনার সাকিবের উইকেট ৪৭টি (১২ টেস্টে)। সেরা বোলিং ফিগার ৬/৩৩ (২০১৮ সালে কিংস্টনে) ওয়েষ্ট ইন্ডিজের মাটিতেও সাকিবের আছে ৫ টেস্টে ২২ উইকেট।

তার মধ্যে ৫ বা তার বেশি উইকেট আছে দুইবার। কিন্তু সে তুলনায় মুমিনুল আর লিটন দাসের পরিসংখ্যান অনেক দুর্বল। দেশে পারফরম্যান্স ঠিক থাকলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজে মুমিনুলের ট্র্যাক রেকর্ড বেশ খারাপ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সবমিলিয়ে ৯ টেস্টে ১৭ ইনিংসে মুমিনুল হকের সংগ্রহ ৪৯১ রান। সর্বোচ্চ ১২০। গড় ২৮.৮৮। সেঞ্চুরি ২টি, হাফসেঞ্চুরিও ২টি।

কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ৫ টেস্টে ১০ ইনিংসে রান মোটে ১৪২। কোনো সেঞ্চুরি নেই, হাফসেঞ্চুরি দুটি। সর্বোচ্চ ৫৬। গড় মাত্র ১৪.২০।

২০১৪ সালে প্রথমবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে জোড়া হাফসেঞ্চুরি (৫১, ১২, ৩, ৫৬) উপহার দিলেও তারপর ২০১৮‘তে দুই টেস্টে (১, ০, ০, ১৫) আর এবার প্রথম টেস্টে (০ ও ৪) একদমই রান নেই মুমিনুলের ব্যাটে।

লিটন দাসের অবস্থাও প্রায় একইরকম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ টেস্টে ১১ ইনিংসে রান ৩৫৫। কোনো সেঞ্চুরি নেই। সর্বোচ্চ ৭১। নিজের গড় ৩৫.৭৮। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সেটা কমে ৩২.২৭। হাফসেঞ্চুরি ৩টি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ৩ টেস্টে ৬ ইনিংসে লিটন সাকুল্যে করেছেন ১০১ রান। কোন ফিফটি নেই। সর্বোচ্চ ৩৩। গড় মাত্র ১৬.৮৩।

ওপরের পরিসংখ্যান পরিষ্কার জানান দিচ্ছে, সেন্ট লুসিয়ায়ও বাংলাদেশের আশা-ভরসার কেন্দ্রে সাকিব আর তামিমই। এ দুই অভিজ্ঞ সেনাপতির জ্বলে ওঠার ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের সাফল্য-ব্যর্থতা।

আরেকটি তথ্য, দুই অভিজ্ঞ তারকার সামনেই আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে ১ হাজার পূর্ণ করার সুবর্ণ সুযোগ। তামিম আছেন ৯৪ রান পেছনে। সাকিবের চাই ৭৩ রান। দেখা যাক, কে আগে এই মাইলফলকটা ছুঁতে পারেন!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *