Breaking News

শেষ দুই সেশন এলোমেলো বোলিং বাংলাদেশের, লিড নিলো উইন্ডিজ: দেখুন দ্বিতীয় দিন শেষে ফলাফল

প্রথম সেশন ভাল করলেও শেষ দুই সেশন এলোমেলো বোলিংয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে পরে ফলে, বড় লিদের পথে আছে  উইন্ডিজ। মেহেদী হাসান মিরাজ আর খালেদ আহমেদের তোলা হঠাৎ ঝড়ে কিছুটা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

১৩১ এবং ১৩২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। কিন্তু টাইগারদের জন্য পরের গল্পটা পুরোপুরি হতাশার। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশন তো নয়’ই, বরং তৃতীয় সেশনে এসে কেবল একটি উইকেট নিতে পেরেছে সাকিব আল হাসান অ্যান্ড কোং।

তাতে বাংলাদেশের ওপর বেশ প্রাধান্য বিস্তার করেই বসে যেতে পেরেছে স্বাগতিকরা। স্বাগতিকদের হঠাৎ এলোমেলো অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর নায়ক কাইল মায়ার্স।

মিডল অর্ডার এই ব্যাটারের অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সামনে ১০৬ রানের লিড দাঁড় করিয়ে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিন শেষে ১২৬ রানে অপরাজিত রয়েছেন মায়ার্স।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪০। তারা খেলেছে মোট ১০৬ ওভার। মায়ার্সের সঙ্গে ২৬ রান নিয়ে তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামবেন জসুয়া ডা সিলভা।

সকালের সেশনে শেষ সময়ে এসে দারুণ চমক দেখিয়েছিলেন টাইগার বোলাররা। ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটি তো ভেঙেছেই, এরপর ১ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে লড়াইয়ে ফিরেছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু প্রথম সেশনে সফরকারীদের হাসি দ্বিতীয় সেশনে মিলিয়ে দেন কাইল মায়ার্স আর জার্মেইন ব্ল্যাকউড। ক্যারিবীয় এই যুগল গড়লেন ৩৪.৪ ওভারে ১১৬ রানের জুটি।

বড় জুটি গড়ার পর মেহেদী হাসান মিরাজের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ব্ল্যাকউড। ১২১ বলে ৪০ রান করে ফিরে যান তিনি। তবে মায়ার্স-ব্ল্যাকউড জুটির ওপর ভর করেই লিড পেয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

এরপর মায়ার্স আর জসুয়া ডা সিলভা মিলে গড়েছেন ৯২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। তারাই আজ তৃতীয় দিন মাঠে নামবেন ব্যাট করার জন্য। এর আগে বিনা উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম সেশনে ৪ উইকেটে তুলেছিল ১৩৭ রান।

প্রথম ব্রেক থ্রুটা এনে দিয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় ব্রেক থ্রু পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি বাংলাদেশের। ১৩১ রানের মাথায় ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটায় টাইগাররা। এবার উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ।

এই ১৩১ রানের মাথায় বসিয়ে রেখে স্বাগতিকদের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন পেসার খালেদ আহমেদ। এরপর আর এক রান যোগ হতে খালেদের ঝুলিতে আরও ১ উইকেট। ১ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় ক্যারিবীয়রা।

দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন দুই ক্যারিবীয় ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল। দু’জন মিলে ১০০ রানের জুটি গড়ে ফেলেন।

এরপরই স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ের ওপর প্রথম আঘাতটা হানেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। ২৬তম ওভারে তার শেষ বলটি ছিল শট পিচ করা। সঙ্গে এক্সট্রা বাউন্স হয়েছিল তাতে।

ক্যাম্পবেল চেষ্টা করেছিলেন পুল করতে। কিন্তু গতি আর এক্সট্রা বাউন্সের কাছে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। বল গ্লাভসে লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। ৭৯ বল খেলে ৪৫ রান করে আউট হন ক্যারিবীয় ওপেনার।

এরপর মেহেদি হাসান মিরাজের আর্ম বলটাকে ফ্রন্ট ফুটে ডিফেন্ড করতে চেয়েছিলেন ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু বলটাকে ঠিকমত পড়তে পারেননি। বলটা হালকা বাঁক খেয়ে গিয়ে সোজা আঘাত হানে তার স্ট্যাম্পে।

আউট হওয়ার আগে অবশ্য হাফসেঞ্চুরি করেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক। ১০৭ বলে ৫১ রানে থাকতেই মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরলেন ব্র্যাথওয়েট।

এরপর এক ওভারে জোড়া চমক খালেদ আহমেদের। ৩৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি ছিল অফ স্ট্যাম্পের ওপর শট লেন্থের ডেলিভারির। স্টিয়ার করতে চেয়েছিলেন রেমন রেইফার।

কিন্তু বল ভেতরের কানায় লেগে গিয়ে আঘাত হানে সোজা স্ট্যাম্পে। ২২ রান করে আউট হলেন রেইফার। একই ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন এনক্রুমাহ বোনারও। কোনো রানই করতে পারেননি তিনি।

খালেদের গতিময় বলটি পা দিয়েও ঠেকাতে পারেননি বোনার। ১৩২ রানে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চতুর্থ উইকেট। চতুর্থ উইকেট পরার পর থেকেই বলিংয়ে যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। কেউই তেমন ভাল বলিং করতে পারেনি

সংক্ষিপ্ত স্কোর দ্বিতীয় দিন শেষে:

বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস): – ২৩৪/৯ (৬৪.২ ওভার) (তামিম ৪৬, জয় ১০, শান্ত ২৬, বিজয় ২৩, লিটন ৫৩, সাকিব ৮, সোহান ৭, মিরাজ ৯, শরিফুল ২৬, এবাদত ২১*, ফিলিপ ২/৩০, জোসেফ ৩/৫০, সিলস ৩/৫৩)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (প্রথম ইনিংস): – ৩৪০/৫ (১০৬ ওভার) (ক্যাম্পবেল ৪৫, ব্র্যাথওয়েট ৫১, রেইফার ২২, মায়ার্স ১২৬*, ব্ল্যাকউড ৪০, জশুয়া ২৬*, খালেদ ২/৭৭, মিরাজ ২/৬৮

আজ রাত ৮ টায় তৃতীয় দিনের খেলায় মুখোমুখি হবে দু-দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *