ভারতকে পাত্তা না দিয়েই বেয়ারস্টো-রুটের ব্যাটে রেকর্ডগড়া জয়ের পথে ইংল্যান্ড ইতিমধ্যেই জয়ের সুবাশ পাচ্ছে ইংলিশরা। এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানের বিশাল লিডের পর ইংল্যান্ডের সামনে ৩৭৮ রানের লক্ষ্য ঝুলিয়ে দেয় ভারত।
এর চেয়ে বেশি লক্ষ্য তাড়া করে জেতার কীর্তি টেস্টের প্রায় ১৫০ বছর আর ২৪৭০ ম্যাচের ইতিহাসে ঘটেছে মাত্র ৮ বার, তাতে একবারও লেখা নেই ইংলিশদের নাম।
কাজটা যে কঠিন তা বলাই বাহুল্য। তবে দারুণ সাবলীল ব্যাটিংয়ে সেটাই রীতিমতো মামুলি বানিয়ে ছেড়েছে বেন স্টোকসের বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড।
বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলিং লাইনআপকে রীতিমতো ধসিয়ে চতুর্থ দিনের ৫৭ ওভারেই তুলে ফেলেছে ২৫৯ রান। তাতে রেকর্ডগড়া জয় থেকে মাত্র ১১৯ রান দূরে চলে এসেছে দলটি।
ভারতের প্রথম ইনিংসের লিডটা বড়সড়ই ছিল। তার ওপর তৃতীয় দিন শেষে উইকেটে বেশ থিতু দেখাচ্ছিল চেতেশ্বর পুজারা আর ঋষভ পান্তকে। ভারতের লিডটা তখনই ছিল ২৫৭ রানের। দুজনকে নিয়েই ভারত দেখছিল আরও বড় লিডের স্বপ্ন।
তবে পুজারা এরপর বেশি দূর এগোতে পারেননি। আগের দিনের ফিফটির সঙ্গে গতকাল যোগ করতে পারলেন আর মাত্র ১৬ রান। শ্রেয়াশ আইয়ারও থিতু হয়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এলেন। ফিফটির পর বেশি দূর টিকতে পারলেন না পান্তও।
ভারতীয় ইনিংসের লেজের ব্যাটসম্যানরা এরপর কিছু রান যোগ করেছেন বটে, তাতে রান গিয়ে ঠেকল ২৪৫-এ, লিড দাঁড়াল ৩৭৭ রানের। আর সব দল হলে এই রানটা যথেষ্ট নিরাপদ বলেই ধরা যেত।
তবে দলটা যে ইংল্যান্ড! টেস্ট ইতিহাসে টানা তিন ম্যাচে ২৫০+ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জেতার রেকর্ডটা গড়ে এই টেস্টে এসেছিল ইংলিশরা।
নিজেদের ইতিহাসে কখনো ৩৫৯ রানের বেশি লক্ষ্য তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই, তো কী হয়েছে? বেন স্টোকসের দল সেসবে থোড়াই কেয়ার করে! আগের তিন ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসের ব্যাটিংয়ে ডালভাত বানিয়ে ফেলার কাজটা এবারও করল দলটা।
এবার পার্থক্যটা হচ্ছে, এই টেস্টে প্রতিরোধটা এলো একেবারে গোড়া থেকেই। উদ্বোধনী দুই ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স লিস আর জ্যাক ক্রলি সাড়ে চারের বেশি রান রেটে শুরুতেই তুলে ফেললেন ১০৭ রান।
চতুর্থ দিনে চা বিরতির অপেক্ষায় যখন দুই দল, তখনই বুমরাহর আঘাত; ক্রলির বিদায়ের একটু পরেই চা বিরতির ডাক এলো ম্যাচে। বিরতি থেকে ফিরেই ওলি পোপকে পান্তের হাতে ক্যাচ বানালেন বুমরাহ।
এক ওভার পর আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স লিস ফিরলেন রান আউটে কাটা পড়ে। ১০৭/০ থেকে তিন ওভারের ব্যবধানে ১০৯/৩ হয়ে যায় ইংলিশদের স্কোরকার্ড।
পরের গল্পটা স্রেফ ভারতের হতাশার। জো রুট আর জনি বেয়ারস্টো শুরুতে সময় নিলেন খানিকটা। জুটির ৫০ এলো ৮৬ বলে, ইংল্যান্ডের মানদণ্ডে যেটা খুবই ধীরগতির। বেয়ারস্টো খোলসে ঢুকে থাকলেও, এরপর রুট ছিলেন যথেষ্ট সাবলীল।
৫০ তুলে ফেলেছিলেন ৭১ বলে। সঙ্গীর পঞ্চাশের পরই মিললো আসল বেয়ারস্টোর দেখা। এক পর্যায়ে ৩৪ বলে ১৮ রানে থাকা বেয়ারস্টো দিন শেষ করেন ৮৭ বলে ৭২ রান নিয়ে।
দু’জনের ১৯৭ বলে ১৫০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি চতুর্থ দিন শেষে ভারতকে রাখল হারের শঙ্কায়। দলকে দিয়ে রাখল রেকর্ডগড়া জয়ের হাতছানি। আজ শেষ দিন মুখোমুখি হবে দু-দল।