Breaking News

চ্যাম্পিয়ন ক্ষুদে শিহাবের স্বপ্ন ‘রশিদ খান’ হয়ে জাতীয় দলে খেলার !

চ্যাম্পিয়ন ক্ষুদে শিহাবের স্বপ্ন রশিদ খান হয়ে জাতীয় দলে খেলার। প্রথম ওভারের প্রথম বলেই আঘাত হানলেন সামিউল ইসলাম শুভ। ওভারের শেষ বলে আবারও উইকেট নেন তিনি।

দুইবারই বাকি সবার চেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস দেখা গেলো অধিনায়ক শাইখ ইমতিয়াজ সাকিবের মধ্যে।

যেন তিনিই নিয়েছেন উইকেট দুইটি। সে দুই উইকেট নেননি শিহাব। তবে ১২তম ওভারে আক্রমণে এসে নিজেই নিয়েছেন একের পর এক উইকেট।

ছয় ওভারের স্পেলে মাত্র ১৪ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়ে দলকে এনে দিয়েছেন দারুণ এক জয়। অধিনায়ক বল হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ায় ৫৯ রানে জিতেছে তার দল।

সোমবার নারায়ণগঞ্জের শামসুজ্জোহা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের ক্রিকেট মাঠে স্কুল ক্রিকেটের ফাইনালে রংপুর শিশু নিকেতন মাত্র ১০২ রানে অলআউট হয়ে যায়। তবে বোলিংয়ে নেমে মেহেরপুরকে মাত্র ৪৩ রানে গুটিয়ে দিয়ে সহজেই শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে রংপুর।

ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক শিহাবের হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। শুধু তাই নয়, আসরে চারবার ম্যাচে পাঁচ উইকেটসহ মোট ৩৩ উইকেট নিয়ে তিনিই পেয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির পুরস্কার।

এই ৩৩ উইকেটের সঙ্গে ২০০’র কাছাকাছি রান করে টুর্নামেন্টসেরাও নির্বাচিত হয়েছেন শিহাব। লম্বা আগ্রাসী রানআপে পপিং ক্রিজে হালকা লাফিয়ে করা প্রতিটি ডেলিভারিতেই উইকেট নেওয়ার লক্ষ্য থাকে এরই মধ্যে বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে খেলা শিহাবের।

ম্যাচ শেষে কথা হয়েছে রংপুর অধিনায়ক শিহাবের সঙ্গে। তিনি জানালেন, ক্রিকেটে হাতেখড়ির সময় থেকেই লেগস্পিনার হওয়ার ইচ্ছের কথা। লেগস্পিন করার ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের তারকা রশিদ খানকে অনুসরণ করেন শিহাব।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার ইচ্ছা আমি একজন বড় মানের লেগস্পিনার হবো। লেগস্পিনের ক্ষেত্রে রশিদ খানকে অনুসরণ করি আমি।’

এরই মধ্যে লেগস্পিনের চারটি বড় বিষয় রপ্ত করে ফেলেছেন ১৬ বছরের শিহাব। জানালেন, ‘এখন পর্যন্ত লেগস্পিনের চারটি বিষয় আমি আয়ত্ব করতে পেরেছি- লেগস্পিন, গুগলি, টপ স্পিন ও স্লাইডার। এগুলো নিয়েই কাজ করছি।’

আপাতত স্কুল পর্যায়ে খেললেও ছোট্ট শিহাবের লক্ষ্য অনেক বড়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের আজন্ম আক্ষেপ লেগস্পিনার নিয়ে। সেটি পূরণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েই নিজেকে তৈরি করার পথে এগোচ্ছেন শিহাব।

এই ক্ষুদে ক্রিকেটার বলেছেন, ‘আমার লক্ষ্য ও চেষ্টা অবশ্যই জাতীয় দলে খেলার। বাংলাদেশ দলে যেহেতু এখন লেগস্পিনার নেই, আমি নিজেকে সেভাবেই তৈরি করতে চাচ্ছি। আমি ওই গতিতেই এগোতে চাই, যেটা আমার এখন আছে। আমি আরও ভালো করতে চাই।’

জাতীয় স্কুল ক্রিকেটে নিজের অর্জন নিয়ে সন্তুষ্ট শিহাব। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, ভালো লাগছে। শুরু থেকেই লক্ষ্য ছিল সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হবো।

আমার মিশন ছিল প্রতিটি ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিবো, প্রতি ম্যাচে ম্যাচসেরা হবো, প্রতিটি ম্যাচে নিজের সেরাটা দিবো। আলহামদুলিল্লাহ আমি পেরেছি।’

স্কোরবোর্ডে রান মাত্র ১০২, ম্যাচের পাল্লা তখন প্রতিপক্ষের দিকেই। তবু রংপুর শিশু নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্ষুদে ক্রিকেটারদের মধ্যে নেই চিন্তার ছাপ। নিজেদের ইনিংস শেষ হওয়ার পর এই অল্প রানেই ম্যাচ জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন শিহাব, শুভ, সাকিবরা।

প্রথম ইনিংসের পর দলের মধ্যে কী কথা হচ্ছিল? জানতে চাওয়া হলে শিহাব বলেন, ‘আসলে যত কম রান হবে, ম্যাচটা তত মজা হবে। আমরা এর আগে চারটা ম্যাচ এভাবেই জিতেছি, ১০০ রান করেও জিতেছি।

আমাদের বোলারদের লক্ষ্য ছিল শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো। দলকে বলেছিলাম, রান কম হয়েছে হোক। আমাদের এফোর্ট যেন রানের চেয়েও বেশি থাকে।

তিনি যোগ করেন, ‘এই টুর্নামেন্টটা খুব ভালো উপভোগ করেছি আমরা। আমাদের অনেক খেলোয়াড় নিজেদের দক্ষতা দেখাতে পেরেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল একটা ভালো জায়গায় যাওয়া। যখন থেকে টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছে, তখন থেকেই সবার মধ্যে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাবটা ছিল।

দলকে নেতৃত্ব দিয়ে চ্যাম্পিয়ন করার তৃপ্তি প্রকাশ করে শিহাব বলেছেন, ‘পুরো যাত্রাটা অনেক ভালো ছিল। খেলাটা আমরা খুব ভালোভাবে শেষ করেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ফাইনাল ম্যাচ জেতা।

আমরা জিতে দেখিয়েছি। দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আমি খুব খুশি। আমি যেটা বলেছি, আমাদের যেটা পরিকল্পনা ছিল, পুরো দল মিলেই সেটা করেছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *